পাতা:গল্পস্বল্প.djvu/৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

( ৩৫ )

কর্ত্তব্যাকর্ত্তব্য শিক্ষা হইবে; সেই সামান্য কষ্ট সহ্য করিয়া তুমি মানুষ নামের যোগ্য হইবে; ইহা হইতে সুখের বিষয় আর কি আছে। একটি বালক কিরূপ স্থলে সত্য পালন করিয়া জগতের পূজনীয় হইয়াছেন তাহা শুনিবে?


 একদা একদল মুসলমান যাত্রী বোগদাদ নগরে যাইতেছিল। সন্ধ্যা হইয়া পড়িয়াছে এখনো তাহারা প্রান্তর পথ উত্তীর্ণ হইতে পারে নাই, দারুণ শীতে তাহাদের শোণিত যেন বরফের মত জমাট বাঁধিয়া আসিতেছে; নিকটে বসতির চিহ্ন মাত্র নাই; সুদূরে কোন দীপের ক্ষীণালোকও দেখিতে পাওয়া যাইতেছে না—যে তাহা দেখিয়া তাহাদের নৈরাশ্য পূর্ণ হৃদয়ে কথঞ্চিৎ আশার উদ্রেক হয়, তথাপি তাহারা লক্ষ্যহীন, নিরাশ হৃদয়ে অগ্রসর হইতেছে। সহসা তাহারা চমকিয়া উঠিল, একদল দস্যু ভীষণ চীৎকার করিয়া তাহাদের নিকটবর্ত্তী হইল। দেখিতে দেখিতে দস্যুদল কর্ত্তৃক তাহারা আক্রান্ত ও পরাভূত হইল। প্রান্তরের সীমানায় ক্ষুদ্র পাহাড়ের অন্তরালে দস্যদিগের বসতি,— যাত্রীদিগকে বন্দী করিয়া তাহারা সেইখানে লইয়া গেল, এবং তাহাদিগের সর্ব্বস্ব কাড়িয়া লইল। যাত্রীদিগের মধ্যে একটি বালক ছিল, কেবল তাহার নিকটে দস্যুগণ এক কপর্দ্দকও পাইল না। তাহার বস্ত্রাদি উত্তমরূপ অনুসন্ধান করিবার পর এক জন দস্যু তাহাকে জিজ্ঞাসা করিল—“তোমার কাছে কিছুইনাই?

 বালক বলিল—“আছে।”

 দস্যু ভাবিল বালক উপহাস করিতেছে। সে বলিল—“কি আছে?”