পাতা:গল্পস্বল্প.djvu/৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

( ৪৭ )

সেইখানে আসিয়া উপস্থিত হইল। তাহাকে দেখিয়া ভাগ্যদেবী সহাস্য-মুখে জিজ্ঞাসা করিলেন—“কোথা হইতে আসিতেছ? দেখিয়া ত বোধ হইতেছে পৃথিবী হইতে। সেখানকার খবর কি?”

 পরী বলিল—“খবর বড় ভাল নহে। লোকে কেবল সেখানে নিজের ভাগ্যের আর তোমার নিন্দা করিতেছে। বাস্তবিক তোমার ভাণ্ডারে ধন মান যশ প্রভৃতি মানবের প্রার্থনীয় বস্তুর কিছুরই অভাব নাই—তুমি ইচ্ছা করিলেই লোককে সুখী করিতে পার, তবে কেন কর না? আমি যদি তোমার কাজে থাকিতাম— তাহা হইলে কেহ দুঃখ পাইত না।”

 ভাগ্য দেবী ক্রুদ্ধ হইয়া বলিলেন—“বেশ ত তুমি কিছু দিন আমার কাজ করিয়া দেখ না মানুষকে সুখী করা কেমন সহজ।” এই বলিয়া ভাগ্য দেবী তাঁহার ধন ভাণ্ডারের চাবি পরীর হাতে দিলেন। পরী ভাগ্যদেবীর ভাণ্ডার খুলিয়া তাহার শোভায় মোহিত হইয়া গেল।

 ভণ্ডারটি তিন ভাগে বিভক্ত। প্রথম কক্ষটি ধন ভাণ্ডার— অগণ্য হীরা মুক্তা, মণি কাঞ্চনের জ্যোতিতে কক্ষ আলোকিত, এই আলোকসাগরে পড়িয়া পরীর চক্ষু যেন ঝলসিয়া যাইতে লাগিল।

 দ্বিতীয় কক্ষটি মান যশ বিদ্যা বুদ্ধির ভাণ্ডার, ইহার দিগন্ত ব্যাপী সৌরভে পরীর হৃদয় মুগ্ধ হইয়া পড়িল।

 তৃতীয় কক্ষে বাহ্যমোহকর বস্তুকিছু ছিলনা, এই কক্ষে প্রবেশ করিবা মাত্র একটি অপূর্ব্ব শান্তিতে তাহার মনপ্রাণ পরিপূর্ণ হইয়া উঠিল। এই কক্ষটি ভাগ্য দেবীর সাররত্নের ভাণ্ডার,—সন্তোষ ও প্রেম এই দুইটি মাত্র রত্ন এখানে রক্ষিত।