পাতা:গল্পস্বল্প.djvu/৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

( ৪৯ )

 এই ভাবিয়া পরী এক রাজগৃহে আসিয়া দেখিল, রাজার ধন মান কিছুরই অভাব নাই কিন্তু তথাপি তিনি সুখী নহেন। নিষ্ঠুর রাজা প্রজাদিগের উপর সর্ব্বদাই পীড়ন করেন, অথচ তিনি চাহেন সকলেই তাঁহার বশীভূত হয়। পরীর কৃপায় তাঁহার বাসনা পূর্ণ হইল, বিদ্রোহী প্রজারাও তাঁহার অনুগত হইয়া পড়িল। রাজাকে সুখী করিয়া পরী গর্ব্বিতহৃদয়ে ভাগ্য-দেবীকে এই শুভ সংবাদ দিতে তাঁহার নিকট গমন করিল। পথের মধ্যে তাহার মনে হইল, “আচ্ছা সেই কৃষক যাহাকে ধন দিয়া আমি সুখী করিয়াছি, সে কেমন সুখে আছে একবার দেখিয়া যাই”।

 চাষার নিকট আসিয়া পরী দেখিল, চাষ ধনী হইয়াছে বটে—কিন্তু তথাপি সে সুখী হইতে পারে নাই, তাহার ধন-তৃষ্ণা আরও বৃদ্ধি পাইয়াছে মাত্র। পরী তখন তাহাকে আরও ধন প্রদান করিল, কিন্তু তাহাতেও তাহার ধনতৃষ্ণা মিটিল না। তখন পরী হতাশ হইয়া ভাবিল—“একজনকে সুখী করিতে নাই পারিলাম, অপর দুই জনকে ত করিয়াছি”।

 কিন্তু তাহাদের নিকট আসিয়া দেখিল, হায়! তাহার সমস্ত দানই ব্যর্থ হইয়াছে—কেহই সুখী হয় নাই। আশা কাহাকেও সহজে ছাড়ে না, অন্তঃপর পরী ভাবিল—“আমি আর একবার ইহাদিগকে সুখী করিতে চেষ্টা করিব। তৃতীয় কক্ষের ধন এপর্য্যন্ত কাহাকেও দিই নাই, সেই সার ধন দিয়া ইহাদের দুঃখ দূর করিব।” এই ভাবিয়া পরী তৃতীয় কক্ষের দুইটি রত্ন লইয়া প্রথমে চাষার নিকট, পরে ধনীর নিকট আসিয়া তাহাদের প্রার্থিত ধনের পরিবর্ত্তে সন্তোষ-ধন দিতে চাহিল। কিন্তু উভয়ের মধ্যে কেহই তাহা লইতে সম্মত হইল না। তখন পরী রাজগৃহে গিয়া উপস্থিত হইল। যদিও পরীর করুণায় এখন প্রজারা রাজার বশীভূত, কিন্তু নিষ্ঠুর অত্যাচারী রাজা মনে মনে সদাই শঙ্কিত। পরী তাহাকে প্রেমরত্ন