পাতা:গল্পস্বল্প.djvu/৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

( ৭৫ )

ইলিজা একটি ডিম্ব-বিক্রেত্রী বালিকার উপর আসিয়া পড়িলেন। ইহাতে বালিকার মস্তক হইতে ডিমের ঝুড়িটি ভূমিতলে পড়িয়া গিয়া তাহার সমস্ত ডিম্বগুলিই প্রায় ভাঙ্গিয়া নষ্ট লইয়া গেল। বালিকা কাঁদিতে লাগিল।

 ইলিজা তাহাতে ভীত হইয়া নেপোলিয়নকে বলিলেন “চল ভাই আমরা পালাই। এ মেয়েটি আমাদের চেনে না, চেনা লোক কেহ দেখিবার আগে আমরা বাড়ী পৌঁছিব।”

 নেপোলিয়ন বলিলেন “না আমি পলাইব না। দেখিতেছ না মেয়েটি কাঁদিতেছে? আমরা উহার ক্ষতি করিয়াছি—যতদূর পারি এখন তাহা পূরণ করিতে আমাদের চেষ্টা করা উচিত”।

 ইলিজা একটু লজ্জিত হইয়া পড়িলেন,—কারণ ক্ষতি তিনিই করিয়াছেন, অথচ তিনি নিজেই পলাইতে চাহিতেছেন।

 এদিকে মেয়েটী অত্যন্ত কাঁদিতে কাঁদিতে বলিল—“এই ডিম বিক্রয় করিয়া যাহা কিছু পয়সা পাওয়া যাইত, তাহাতে আমাদিগের পরিবারের তিন দিন আহার চলিত। এখন আমি কি করিয়া আমার শয্যাগত মাতা এবং ক্ষুধিত ভ্রাতা ভগিনীদিগের নিকট গিয়া বলিব যে তিন দিন আর তাহারা আহার পাইবেনা?”

 এই কথা শুনিয়া নেপোলিয়ন তাঁহার পকেট হইতে ২টী ফ্লরিন লইয়া তাহাকে দিয়া বলিলেন, “আমাদের যাহা সাধ্য দিতেছি তুমি আর কাঁদিও না।”

 তাহাদিগের দৈনিক জলখাবার কিনিবার এই ফ্লরিন দুইটী নেপোলিন বালিকাকে দান করিলেন দেখিয়া ইলিজা ব্যগ্র ভাবে বলিয়া উঠিলেন “ভাই, ও কি করিলে? আমরা যে শুধু রুটী ছাড়া অন্য কিছুই খাইতে পাইব না”।