পাতা:গল্প-গ্রন্থাবলী (প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়) তৃতীয় খণ্ড.djvu/১৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উপন্যাস কলেজ సిEషి লিখবে। নইলে আমার জীবন দাবহ হয়ে উঠবে—পড়াশুনো চলোয় বাবে—আমি ফেল হব।" সষমা বলিল, “তা-লিখবো বইকি ! তুমিও আমায় রোজ একখানি চিঠি লিখবে ত ?” অবিনাশ বলিল, “নিশ্চয়, নিশ্চয় !" “আর ফি শনিবারে আসবে ত? বাবা ত তোমায় বলেই রেখেছেন—ম-ও যাবার সময় তোমায় বলবেন । শনিবার বিকেলে আসবে, রবিবার থেকে, সোমবার সকালে উঠে চা-টা খেয়ে মেসে ফিরে যাবে। কেমন, কথা রইল ত?” “নিশ্চয় নিশ্চয় –কিন্তু, অতদিন অতদিন বাদে এক একটিবার দেখা—সহ্য করা শক্ত যে সম! মাঝে অন্ততঃ একটি দিন—ধর ব-ধবার—তোমার মুখখানি আর একবার আমার দেখতে পাওয়৷ চাই।” সষমা ক্ষ-প্রস্বরে বলিল, “কিন্তু তা কি করে হবে ?" অবিনাশ বলিল, “আমি তার একটা উপায় সিথর করেছি। তুমি, প্রতি বধবারে, বেলা ঠিক আটটার সময়, তোমাদের ছাদে উঠে, উত্তর-পশ্চিম কোণটায় দাঁড়াবে। আমিও ঠিক সেই সময হবিশ মাখয্যের রোড দিযে যাব। যদিও এ বাড়ী গলির ভেতর, কিন্তু হরিশ মাখযোব রোড থেকে ছাদেব প্রায আধখানা বেশ দেখা যায় তা জান ত ?” স.ষমা বলিল, হ্যাঁ, তা জানি। হরিশ মাখয্যের রোড দিয়ে যখন বর-টর যার আমরা ছাদে উঠে দেখি কিনা। —বলিয়া সষমা ফিক করিয়া একট হাসিল। হাসির কারণ জানিবার জন্য অবিনাশ ব্যস্ত হইয়া উঠিল। সাষমা বলিল, “একটা কথা মনে হ’ল তাই হাসলাম।” কি কথা—বল—বল।’ "মনে হ’ল এতদিন ছাদে উঠে পরের বর দেখে মরেছি, এখন নিজের বরটিকে দেখে বচবো। কেবল রোশনাই বাজনাবাদ্যি থাকবে না এই যা তফাৎ।” অবিনাশ প্রিযতমার এই বসিকতায় স্বয়ং কালিদাসের কবিত্বমাধয্য উপলব্ধি করিল। আনন্দবেগ সবরণ করিতে না পারিষা তাহাকে হাদয়ে বধিয়া, চবনের ফাঁকে ফাঁকে বলিতে লাগিল, “কি সন্দব তোমার ভাব; কি সন্দের তোমাব প্রকাশ-ভঙ্গি। কিন্তু কেন রোশনাই থাকবে না ? চোখে যাদেব প্রেমের মাণিক জৰলছে, তাদের কি রোশনাইয়ের অভাব ? হৃদয়ে যাদের সবগের বীণা বাজছে তাদের অন্য বাজনার দরকার কি ?” অবিনাশ শবশরোলয় হইতে শ্যামবাজারে পিতামাতার নিকট ফিরিবার দিন দুই পবেই, তাঁহাদের দেশে ফিরিবার সময় উপস্থিত হইল। অবিনাশ কিন্তু বাড়ী যাইবার কোনও উদ্যোগ করিল না। পিতাকে বলিল, “আর মোটে তিন হস্তা ত আছে কলেজ খলতে । আবার যাওয়া, আবার আসা, মিথ্যে কতকগুলো টাকা খরচ বইত নয়! তার চেয়ে বরঞ্চ মেসেই গিয়ে থাকি ?” পত্রের অন্তরের গোপন অভিপ্রায় বিলক্ষণ বুঝিতে পারিয়া, পিতা মনে মনে একটা হাসিলেন। বলিলেন, “আচ্ছা, সেই ভাল। পড়াশনা বেশ মন দিয়ে কোর ।" “আজ্ঞে হ্যাঁ—সে আমায় বলতে হবে না। এখন মেস ত প্রায় খালি, পড়াশুনোর বেশ সবিধে হবে। অনেকটা সেই কারণেও, এখন বাড়ী যেতে চাচ্ছিনে।”—বলিয়া অবিনাশ সবিয়া পড়িল। ভাবিল, বড়োদের ঠকানো কি সহজ ! छिन পাঁচটি বৎসর কাটিয়া গিয়াছে। এ পাঁচ বৎসরে অনেক ঘটনা ঘটিয়া গিয়াছে। সুষমা প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিক পাস হইয়াছে—ইতা ত বিবাহের অলপদিনের পরেরই ঘটনা। অবিনাশ উচ্চ সন্মামের সহিত