পাতা:গল্প-গ্রন্থাবলী (প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়) তৃতীয় খণ্ড.djvu/১৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৭o গল্প-গ্রন্থাবলী তোমাদের চরণে কোটি কোটি প্রণাম । রাজবাড়ীর সেই পাজি ছ:চৌগলো আমায় যেন পছন্দ না করে —আমায় যেন তারা বিষ-নয়নে দেখে! আমি তোমাদের সববাইকের পজো দেবো—আমায় তোমরা রক্ষা কর, রক্ষা কর, রক্ষা কর।” আজ রায়িতে সাধার ভাল ঘমে হইল না! মাঝে মাঝে জাগিয়া উঠে। দেব-দেবীগণের চরণে পাবোন্ত প্রকারে প্রাথনা করিতে করিতে আবার ঘুমাইয়া পড়ে। অতুলের ছবিখানি দেখিতে ইচ্ছা হয়, কিন্তু ভয়ে আলো জবালিতে পারে না, কারণ প্রাশের কক্ষেই মাতা শয়ন করেন এবং মাঝের দরজা খোলাই থাকে। পবে কতবার রাত্রি জাগিয়া নভেল পড়িতে গিয়া ধরা পড়িয়া মা'র নিকট বকুনি খাইয়াছে। আজ এমন করিয়াই রাত পোহাইল । বেলা একটার সময় নিন্মলাকে আনিবার জন্য গাড়ী পাঠানো হইল। দুইটার মধ্যেই নিম্নমালা আসিয়া পেপছিল। রাজবাড়ীর লোকেরা যথাসময়ে আসিয়া কন্যা দেখিলেন। জ্যোতিষী-মহাশয় প্রথমে সাধার কোঠাঁখানি পরীক্ষা করিয়া, অভিমত প্রকাশ করিলেন, “মেয়েটি সলেক্ষণা বটে।” রাজ-মাতুল বলিলেন, “বরদাবাব, এতদিনে আমাদের ভ্রমণ শেষ হ’ল। চার মাস কাল আমরা নানা পথানে মেয়ে দেখে বেড়াচ্চি, কিন্তু আপনার মেয়ের মত এমন সন্দেরী সুলক্ষণা মেয়ে আমরা কোথাও পাইনি। রঙটার উপরেই রাজা-বাহাদরের বিশেষ রকম ঝোঁক। আপনার এই মেয়ের মত বা এর চেয়েও সশ্রী মেয়ে যে আমরা দেখিনি, তা নয়। তবে গায়ের এমন বণটি আর কোথাও পাইনি। যাকে শাস্ত্রে আসল গৌরী বলে, এ মেয়ে তাই। এই মেয়েই আমাদের পছন্দ । আজ রাত্রেই আমরা দেশে ফিরবো, রাজাবাহাদরকে রাণীমাকে গিয়ে সব কথা বলি। কুমার বাহাদর হয়ত নিজে এসে একবার দেখতে চাইবেন। তারপর শুভকায্যের দিন পিথর করা যাবে। যদি অননুমতি করেন, আজ তা হলে আমরা উঠি।” বিবাহ-পরীক্ষায় মেয়ের এই উচ্চ অনাসের সহিত পাসের সংব দে রদাবাব, আনন্দে বিহবল হইলেন। কিঞ্চিৎ “মিটিমখ" কবিয়া যাইবার জন্য ই’হাদিগকে অনুরোধ করিলেন। পর্বে হইতেই বিলক্ষণ আয়োজনাদি চলিতেছিল। শুধ মিন্টরসে নহে, ষড়রসে রসনা পরিতৃপ্ত করিয়া আগন্তুকগণ বিদায় গ্রহণ করিলেন। গহিণীও আনন্দিত হইলেন। এ তিন মাসে তাঁহার মনে ধারণা জন্মিয়াছিল যে, সন্ধা অতুলকে ভুলিয়াছে। মেযে রাজরাণী হইবে, এ সংবাদে কোন মাতা না আনন্দিত হইবেন ? সাধার কিন্তু কাঁদিয়া কাঁদিযাই রাত্রি কাটিল। অবশেষে সে মনে মনে সিন্ধান্ত করিল-দেব-দেবীগণ সমস্তই ঝট ;–হিন্দুধৰ্ম্মম একেবারেই ফাঁকি। ङिन কুমার-বাহাদর কবে সন্ধাকে দেখিতে আসবেন, এই চিন্তায় বরদাবাব দিবানিশি ব্যস্ত রহিলেন। সপ্তাহান্তে মকুন্দনগর হইতে পত্র আসিল। রাজ-মাতুল লিখিয়াছেন, “আমরা ফিরিয়া আসিয়া রাজা-বাহাদর ও রাণীমার বরাবর আপনার কন্যার বিষয় সবিশেষ বর্ণনা করিয়াছি। শনিয়া তাঁহারা অত্যন্ত খসী হইয়াছেন। কুমার-বাহাদরে খাইবেন না, তবে রাজা-বাহাদর স্বয়ং একবার গিয়া আপনার কন্যাকে দেখিবার ইচ্ছা প্রকাশ করিয়াছেন। কিন্তু এখন তিনি রাজকায্যে অত্যন্ত ব্যস্ত থাকা বিধায়, বোধ হয়, আগামী মাসের পনরই তক কলিকাতা যাত্রা করিতে পারবেন।” সতরাং রাজা-বাহাদরের শভোগমনের এখনও প্রায় একমাস বিলম্ব আছে জানিয়া