পাতা:গল্প-গ্রন্থাবলী (প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়) তৃতীয় খণ্ড.djvu/১৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্থ পরিচ্ছেদ সপ্তাহ পরে একদিন নিম্নমালা তার স্বামীকে কহিল, “হ্যাঁ গী, এ বাড়ীর ভাড়া না কি শুনলাম একশো টাকাঁ ? তুমি যে বলেছিলে, পঞ্চাশ টীকা ..." বসন্ত বলিল “কে বলুলে তোমায় ?” “বাড়ীওয়ালাবাবরে মেয়ে সহোসের সঙ্গে আমার ভাব হয়েছে কিনা। তুমি যখন দপেরেবেলা কাজে বেরিয়ে যাও, তখন আসে। আমায় লড়ো খেলতে শিখিয়েছে, আমরা লডো খেলি। আজ আমাকে সহোস জিজ্ঞেসা করলে, “তোমার স্বামীর মাইনে কত, ভাই ? আমি বললাম, দেড়শো টাকা। সে বললে, “কক্ষণো নয় । তোমার স্বামীর মাইনে নিশ্চয়ই বেশী। যার দেড়শো টাকা মাইনে, সে কি কখনও মাসে একশো টাকা দিয়ে বাড়ী ভাড়া নিতে পারে ?” বসন্ত হাসিয়া হাসিয়া বলিল, “ওe –হাঁ হ্যাঁ, বুঝেছি। আমি এই বাড়ী যখন ভাড়া নিই, তখন বাড়ীওয়ালা আমায় বলেছিল, ‘অনেক খরচপত্র করে বাড়ী তৈরি করেছি, এ বাড়ীর একশো টাকা ভাড়াই আমি ধায্য করে রেখেছিলাম, কিন্তু একশো টাকা কেউ দিতে চায় না। খালি পড়ে থাকে, তার চেয়ে আপনাকে পঞ্চাশ টাকায় দিচ্ছি—কিন্তু কাউকে বলবেন না, কেউ যদি জিজ্ঞাসা করে ত বলবেন, একশো টাকা ভাড়া, কেননা আপনি যদি অন্য বাড়ীতে উঠে সান, তা হ’লে কেউ আর তখন ৫০ টাকার বেশী দিতে টাই-- না –মেষেদের পেrট ত কথা থাকে না, তাই বোধ হয়, বাড়ীতে বলেছেন, একশো টাক। ভাড়া প •া ।” },"মলা বলিল, ওঃ- এতক্ষণে বাবতে পারলাম । বসন্ত বলিল ফের যদি এ কথা ওঠে ত তুমি বোলো যে হ্যাঁ, একশো টাকাই ভাড়া ঠিক হয়েছে বটে, তবে ওঁকে ত সব টাকা পকেট থেকে দিতে হয় না, অন্ধেক বাড়ীভাড়া তাপস থেকে পান ।” “আচ্ছ, তাই বলবো।" প্রাতে বসন্ত যখন আসে, তখন বেলা প্রায় ৯টা। আসিয়া সনানাহার করে তার পর একট বিশ্রাম করিয়া আবার বাহির হইয়া যায়। কোনও দিন বৈকালে ৫টায়, কোনও *দন ৬টায় ফিরিয়া আসে, আবার রাত্রি ৯টা কিবা ১oটার সময় বাহির হইয়া যায়। প্রথম দিনই সে নিৰ্ম্মমলাকে বলিয়াছিল, “রাত্রির জন্যে আমার খাবার কোরো না—আপিসে গিযে খাই কিনা। রাত্রিতে যারা কাজ করে, আপিসেই রোজ তাদের জন্যে খানা তৈরী হয়—আপিসেরই খরচে।" সতবাং নিমালা একবেলা বধিয়া দইবেলা খায়। দগর্ণ ঝি বামার সবজাতীয়, সে নিজের জন্য ও রামার জন্য রন্ধন করে, সে-ও এক বেলা রাঁধে । স তবাং সন্ধ্যাবেলা বাড়ীতে উনান জবলে না। বসন্ত বামাকে বাজার চিনাইযা দিয়াছে, বাজার হাট সেই করে। দরগা ঝি গোয়ালাবাড়ীতে গিবা, দড়িাইয়া থাকিরা খাঁটি দুধ দোহাইযা আনে। একদিন রামা বলিল, ‘জামাইবাবা আপনার আপিসটি ত আমায় চিনিয়ে দিলেন না। যদি হঠাৎ কোনও দরকারই হয় !" বসন্ত বলিল, “আরও দিনকতক যাক, নিয়ে যাব একদিন তোকে সঙ্গে করে। কলকাতার পথঘাট আগে তোর অভ্যাস হোক। নইলে শেষে কি মোটর চাপা পড়ে বড়ো বয়সে প্রাণটা খোয়াবি ?” একদিন সন্ধ্যার সময় বসন্ত বাড়ী আসিলে নিৰ্ম্মমালা হসিতে হাসিতে বলিল, “ওগো, আজ সংহাস আমায় একটা ভারি মজার কথা বলেছে।” বসন্ত জিজ্ঞাসা করিল, “কি কথা ?” “ও বললে কি জন ? বললে, “তোমার স্বামী রোজ বাত্রে বাড়ীতে থাকেন না,