পাতা:গল্প-গ্রন্থাবলী (প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়) তৃতীয় খণ্ড.djvu/২৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

§ , দিব্যদটি *8లి আমার সারিতে এসে, অামায় ছয়ে ছড়ী বললে—ঐ সব রমাল চাবি-টবি—আর একটা জিনিব, যা বয়স্ক পরষমানষের পকেটে থাকা সম্ভব নয়-ছেলেপিলের পকেটে থাকতে পারে। বললে, ভাঙ্গা বিস্কুট। আমি চমকে, পকেটে হাত দিয়ে দেখলাম হ্যাঁ, ভাঙ্গা বিস্কুট রয়েছে আমার পকেটে—কিন্তু সত্যি বলছি ভাই, আমার নিজেরই তা মনে ছিল না। হয়েছিল কি জান; তার চার পাঁচ দিন আগে, সেই কোট গায়ে পায়ে হেটে আমি সহর দেখতে বেরিয়েছিলাম। চাঁদনীতে এসে বড় ক্ষিদে পায়। চার পয়সার বিস্কুট কিনেছিলাম, খানকতক খেয়েছিলাম, খান দুই পকেটে পড়ে ছিল –এ আমার প্রত্যক্ষ দেখা ঘটনা। কি বলতে চাও তোমরা ? সে ছড়ী ঋষি-তপস্বীও নয়, সাধনাও করে না, গর-শরোর খায়, মদ খায়, এবং সম্ভবতঃ খারাপ চরিত্রের মেয়ে। ও কি জান ? কোন-কোনও লোকের ঐ রকম একটা আশ্চৰ্য্য ক্ষমতা থাকে,—তাকে ক্লেয়ারভয়েন্সই বল, আর দিব্যদটিই বল, আর যাই বল।” বিপিন বলিল, “মাদ্রাজ অঞ্চলের গোবিন্দ চেট্রির কথা শুনেছ ত ? এই পনর-ষোল বছর আগেকার কথা। সে সময় খবরের কাগজে প্রায়ই তার কথা বেরতো। তবে সে ভবিষ্যৎ বলতো না, বৰ্ত্তমান বলতো। মাদ্রাজে সে নিজের ঘরে বসে তোমায় বলে দেবে, দেশে তোমার মা সে সময় কি করছেন, বাবা কি করছেন, তোমার স্ত্রী কি করছেন, ইত্যাদি। কলকাতা থেকে কত লোক দেখতে গিয়েছিল। সরেশ সমাজপতির সাহিত্য কাগজে তার বিবরণ বেরিয়েছিল। মনে আছে, আমার বাবা বলতেন, যদি আমার দেহটা ভাল থাকতো, আমি যেতাম। সেই গোবিন্দ চোঁট্রও শুনেছিলাম বন্ধ মাতাল।” কুমন্দবন্ধ থিওজফি সম্বন্ধে কয়েকখানি পন্তেক পাঠ করিয়াছিল। সেও কয়েকজন মহাত্মার আশ্চৰ্য্য ক্ষমতার কথা প্রকাশ করিল। এইরুপ আলোচনায় রাত্রি-ভোজনের সময় সমাগত হইল। পরবত্তী রবিবারে সুরেন্দ্র কয়েকজন মেসবন্ধসহ কৃষ্ণনগর যাত্রা করিল। মেয়ে দেখিয়া সকলেই খাসী। প্রত্যেকেই লক্ষ্য করিল, কুন্দমালার চক্ষতারকা সাধারণ বাঙ্গালী মেয়ের মত কালো নহে, উহা ফিকা বাদামী রঙেরই বটে। আষাঢ়ের শেষ সপ্তাহে কুন্দমালার সঙ্গে সরেন্দ্রনাথের শভে-বিবাহ সম্পন্ন হইয়া গেল । বিবাহের দই দিন পবে দেশ হইতে তাহার পিতৃব্য কলিকাতায় আসিয়াছিলেন। পরদিন সকলে সদলবলে কৃষ্ণনগর যাত্রা করিলেন। শভ-দিনে কুন্দমালার সহিত সরেন্দ্রের বিবাহ হইয়া গেল। কৃষ্ণনগরেই কুশণ্ডিকাক্লিয়া শেষ করাইয়া কাকা-মহাশয বর-কনে লইয়া দেশে গেলেন, বরযাত্রীরা কলিকাতায় ফিরিয়া আসিল । ... " ফলশয্যার রাত্রিতে প্রথম সম্ভাষণের পর সরেন্দ্র নববধকে বলিল, “দেখ, আমাদের এ মিলন-ব্যাপারের সঙ্গে খুব একটা আশ্চৰ্য্য ঘটনা জড়িত আছে।” কুন্দ কৌতুহলী হইয়া বলিল, “কি আশ্চৰ্য্য ঘটনা ?” সরেন বলিল, “যখন তোমাতে আমাতে বিয়ের কোনও কথাই হয়নি, যখন তোমার । মামা আমাকে দেখতেও যান নি, তখনই আমাদের এক বন্ধ ভবিষ্যৎবাণী করেছিলেন যে, তোমাতে আমাতে বিয়ে অনিবাৰ্য্য। আমার সে বন্ধর এক আশ্চৰ্য্য ক্ষমতা আছে। ভবিষ্যতের সব ঘটনা তিনি দিব্যদটিতে দেখতে পান ।” কুন্দ বলিল, “বল কি ? আমার নাম তোমার সে বন্ধ জানলেন কি করে " পটলডাঙ্গার বাসায় এক মাস পাবে শনিবারে যাহা যাহা ঘটিয়াছিল, সরেন তাহা