পাতা:গল্প-গ্রন্থাবলী (প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়) তৃতীয় খণ্ড.djvu/২৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সংশোভনা ૨9૧ নাথের জননী, সধবা অবস্থাতেই সবগারোহণ করিয়াছিলেন। পত্নী ছাড়া, গহে তাহার একটি অবিবাহিতা ভগিনী আছে, তার নাম সালম্বনা, এবং এক বন্ধা জ্যেঠাইমা আছেন, তিনি বধরে হাতে সংসারের ভার তুলিয়া দিয়া এখন হরিনাম জপ, এবং লোকজনকে তজন-গাজন ও এ-কালের সাববিষয়ের নিন্দা করিয়া কাল-যাপন করেন। i. অপর যবেক সংকুমার মজুমদার দরিদ্রের সন্তান। তার পিতা অলপবেতনে কেরাণীগিরি করিতেন, দাইটি কন্যার বিবাহ দিয়া সবসবাত হইয়া ইহলোক হইতে বিদায় গ্রহণ করেন। স্কুমারও কেরাণীগিরি করিয়া জীবন-যাপন করিতেছেন। গহে বিধবা জননী ছাড়া দুইটি ছোট ভাই এবং একটি অবিবাহিতা ভগিনীও বৰ্ত্তমান। সাংসারিক অবস্থার তারতম্য সত্ত্বেও, অমরেন্দ্র ও সঙ্কুমারের মধ্যে বাল্যকাল হইতে বন্ধত্বে অত্যন্ত নিবিড়। বিদ্যালয়ে তাহারা একই শ্রেণীতে পড়িত। প্রবেশিকা পরীক্ষায় কৃতকাষ হইতে না পারিয়া, অমরেন্দ্র পড়া ছাড়িয়া, পিতার হউসে প্রবেশ করে। স্কুমার বি-এ পাস করিয়া এম-এ পড়িতেছিল, এমন সময় তাহার পিতৃবিয়োগ ঘটিল, কাজেই উদরান্নের জন্য বাধ্য হইয়া তাহাকে পড়া ছাড়িতে হইল। বাপের আফিসের বড়সাহেব অনুগ্রহ করিয়া তাহাকে চাকরী দিলেন -সেই চাকরীই সে করিতেছে। আর একটি কথা বলিলেই ইহাদের সংক্ষিপ্ত পরিচয় শেষ হয়। অমরেন্দ্রনাথ প্রকাশ্যভাবে পিথর করিয়াছে, তাহার ভগিনী সান্ত্ৰনার সহিত সক্সেমারের বিবাহ দিয়া নিজেদের বন্ধত্ব পাকা করিয়া লইবে, এবং তাহার মনের গোপন অভিপ্রায়, বিবাহান্তে স্কুমারকে তার অলপবেতনের কেরাণীগিরি ছাড়াইয়া নিজ ব্যবসায়ে শান্য অংশীদার করিয়া লইবে। কিন্তু সান্ত্বনা অগ্রজের মনের এই গোপন অভিপ্রায় অবগত ছিল না। এখন সে আর নিতান্ত ক্ষুদ্র বলিক নহে, তাহার বয়স হইয়াছে চতুদশ বর্ষ। এ বিবাহের প্রস্তাব হওয়া অবধি সে মনঃক্ষর হইয়া আছে। স্কুমারদের বাড়ী সে কতবার গিয়াছে। সে বাড়ীতে বিদ্যুৎ নাই—সতরাং ফ্যান নাই, এবং তেলের আলো জবলে। আসবাবপত্র কুশ্রী এবং বিরল। দাস-দাসী ও অশন-বসনের ব্যবসথাও তাহার পিতৃগৃহের তুলনায় অত্যন্ত হীন। তাই এ বিবাহে তার কিছুমাত্র উৎসাহ নাই। ফলে সকুমারকে দেখিলেই তাহার গা জনলিয়া যায়। এ পয্যন্ত মুখ ফটিয়া সে এ কথা কাহাকেও না বলিলেও, তার বৌদিদি তার মনের ভাব বুঝিতে পারেন, কিন্তু ইহা বালিকাসলভ নিবন্ধিতা বিবেচনা করিয়া, ওটা বড় গ্রাহ্য করেন না। বিবাহ অগ্রহায়ণ মাসের সরাতেই হইবে, ইহার স্থির হইয়া আছে। ऊिन চারিদিকে নীচ প্রাচীর-ঘেরা একটি ছোট বাগান, মধ্যস্থলে একটি নবনিমিত দ্বিতল অট্টালিকা। ফটকের দই পাশে দুইটি ঘর, একটিতে একজন, বারবান থাকে, অপরটিতে মালী বাস করে। গহের নিম্নতলের ঘরগুলি প্রায় সবই খালি মাত্র একটিতে বাড়ীর সরকার থাকে। বাটীর পশ্চাতে কয়েকটি মৎকুটীরে কয়েকজন দলিয়া-জাতীয় লোক বাস করে, তাহারা গহ্বামীর পাতকীবাহক। বিতলে গহ্বামী তাঁহার একমাত্র কন্যাকে লইয়া বাস করেন, তাঁহার আর কেহ নাই। বিতলে পবেদিকের বারান্দায় একটি চেয়ারে পড়িয়া গহ্বামী পেন্সনপ্রাপ্ত সব-জজ বদ্ধ হরিশপ্তকরবাব মধ্যাহ-ভোজনাতে সংবাদপত্র পাঠ করিতেছেন। একটি ছোট টেবিলে রপার ডিবার দই খিলি পাণ। অপর পাবে মেঝের উপর তাঁহার গড়গড়ি রহিয়াছে—সটকা-নলটি চেয়ারের হাতলের উপর পড়িয়া। ভদ্রলোক মাঝে মাঝে কাগজ নামাইয়া নলটি তুলিয়া লইয়া কিঞ্চিৎকাল ধমপান করিতেছেন, আবার