পাতা:গল্প-গ্রন্থাবলী (প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়) তৃতীয় খণ্ড.djvu/২৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

戦&bf গল্প-গ্রন্থাবলী কি নাম লেখানো হবে ? শ্ৰীমতী ঘড়িসন্দরী দেবী?”—বলিয়া পনশ্চ সে হাসির ফোয়ারা খলিয়া দিল। * আমি বলিলাম, "যেমন অদ্ভুত দেশ, নামগুলোও কি তেমনি অস্তুত ! কত বড় মেয়ে জিজ্ঞাসা করেছিস ?” 幽 “হ্যাঁ, আমার চেয়ে বড়। নানী বললে, তার বয়স সতেরো। কোন এক সাহেবের কুঠিতে সে আয়গিরি করে, মেম-সাহেবের লেড়কা খেলায়। মা তাকে একদিন নিয়ে আসতে বল না নানীকে, আমি ঘড়ি দেখবো।” বলিলাম, "আচ্ছা, বলবো।” - দএক দিন পরে নানীকে জিজ্ঞাসা করিলাম, “নানী, তোর খসম আছে ত?” নানী বলিল, “উ তো বহৃৎদিন ভাগ গিয়া।” বলিলাম, “ভাগ গিয়া কি রে? কোথা ভাগ গিয়া ?” নানী তখন তার জীবনের ইতিহাস সংক্ষেপে বলিল। বলিল, তাহার কন্যা যখন মাত্র দই বৎসরের, তখনই তার স্বামী পলাইয়া এক সাহেবের সহিত কলিকাতা চলিয়া যায়। না লেখে চিঠি-পত্র, না পাঠায় টাকা-কড়ি। কিছুদিন তার জন্য অপেক্ষা করিয়া নানী উদরান্নের জন্য, ডাউহিল স্কুলে আয়গিরি চাকুরী গ্রহণ করে। সে স্কুলে খালি সাহেবদের মেয়ে পড়ে। অনেক মেয়ে সেই কুলে বাসও করে, বোডিং হাউস আছে, আবার অনেক মেয়ে বাহির হইতে আসিয়া পড়িয়াও যায়। চারি পাঁচ বৎসর পরে, কলিকাতা হইতে আগত এক সাহেবের খানসামার মুখে সে তার স্বামীর সংবাদ পায়। সে নাকি এক বড়া সাহেবের বাবলুচ্চি গিরি করিতেছে, এবং সেখানেই এক স্বজাতীয়া মেয়েকে বিবাহ করিয়া, নতন সংসার পাতিয়া, সখে স্বচ্ছন্দে আছে। সেই সাহেবের ঠিকানায় স্বামীকে সে এক পত্রও লেখাইয়াছিল; কিন্তু কোনও উত্তর পায় নাই। তার পর হইতে কত লোককে সে জিজ্ঞাসা করিয়াছে, কিন্তু কেহই তাহার স্বামীর সংবাদ বলিতে পারে নাই। দুই বৎসর হইল, স্কুলের সে চাকরী তাহার গিয়াছে। তাহার জিমা হইতে এক দমন্ট "বাবা” (মেয়ে) পলাইয়া যায়, তাই সাহেবরা তাহাকে তাড়াইয়া দিয়াছেন । তারপর হইতে সে কখনও সাহেরের বাড়ীতে আয়াগিরি, কখনও বাঙ্গালীর বাড়ীতে নানীগিরি করিয়া জীবন-যাপন করিতেছে। বলিলাম, “তবে এদিকে দশ বারো বছর তোর স্বামীর আর কোনও খবর পাসাঁন?” “না মাইজদী !” “সে বেচে আছে কি মরে গেছে তাও জানিস না ?” “না, মাইজনী।” “খোঁজ নে না। যদি মরে গিয়ে থাকে, তবে ত তুই আবার সাদি করতে পারিস। তোদের দেশে ত বিধবা-বিবাহ হয়।” নানী বলিল, “না মাইজদী, সাদি আর আমি করতে চাইনে। পাহাড়ী লোগ বড় মদ খায়, খেয়ে জরকে মারে। এ আমি বেশ আছি।” “এখানে তোর মেয়ে ছাড়া আর কেউ আছে ?” “আছে মাইজী। আমার এক ভাই আছে, সে ক্লারেন্ডনে চাকরী করে ” “ठान्न नाप्न कि ?” a * “আঠ নম্বর ।” আমি বিস্মিত হইয়া জিজ্ঞাসা করিলাম, “অঠি নম্বর কি রে? মানুষের নাম কি ও রকম হয় ?” - নানী বলিল, পাবে তার অন্য নাম ছিল বটে, কিন্তু ক্লারেন্ডনে ঢাকিয়া অবধি তাহার নাম হইয়া গিয়াছে আঠ নম্বর। ঐ নামেই সকলে তাকে ডাকে।”