পাতা:গল্প-গ্রন্থাবলী (প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়) তৃতীয় খণ্ড.djvu/২৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ooሆ »ر * গলপ-গ্রন্থাবলী টাকা খরচ করা কি সোজা কথা ? কিন্তু তব আমি করিয়াছিলাম—কেন ? না মেয়েটি আমার সুখে থাকিবে, এই আশায়। কিন্তু দেখনে দেখি একবার দৈব-বিড়-বনা ৷ আমার অবস্থাও বলি, শনন। আমার নিবাসও রাজসাহী জিলায়, ইছমাইলপর গ্রামে নাটোরের তিনটা স্টেশন পরে রঘরোমপুরে নামিয়া তিন ক্লোশ আসিতে হয়। স্টেশনে গরর গাড়ী পাওয়া যায়, পালকীও পাওয়া যায়, কিন্তু ঘোড়ার গাড়ী নাই। আমার নাম শ্রীপ্রমথনাথ দেব—উত্তররাঢ়ী কারন্থ আমরা। পিতার মৃত্যুতে আমি কিছু ভূসম্পত্তি পাইয়াছিলাম, আর কিছু কোম্পানীর কাগজ। তা কোম্পানীর কাগজগুলি মেয়ের বিবাহে ত প্রায় নিঃশেষই হইয়া গিয়াছে। ভূসম্পত্তি ছাড়া, আমার একটি সামান্য কারবারও আছে—গড় প্রস্তুতের একটি কারখানা। কয়েকটি ইক্ষমাড়াই কল আছে, সেই কলে ইক্ষ মাড়িয়া, রস জাল দিয়া গড় প্রস্তুত করি। আমি অবশ্য নিজ হতে করি না, বেতনভোগী কারিগরেরা আছে। কতক ইক্ষ আমার নিজের চাষের, বাকীটা কিনিয়া অনি। আশে-পাশে পাঁচখানা গ্রামের ব্যাপারীরা আসিয়া সেই গড়ে খরিদ করিয়া লইয়া যায়। ভূসম্পত্তির আয়ে এবং কারখানার মনোফায় একরপ ভদ্রভাবেই আমার দিন গজেরাণ হয়। আমার প্রথমা পত্নী জীবিতা নাই, সে আভাস পর্বেই দিয়াছি। খাকীকে চারি বৎসরের রাখিয়া তিনি সবগারোহণ করেন। আমার বয়স তখন বত্রিশ বৎসর মাত্র। আত্মীয়-বধরা সকলেই আবার বিবাহ করিবার জন্য আমায় পীড়াপীড়ি করিতে লাগিলেন। আমি কিছুতেই বিবাহ করিব না।--আমার এত সাধের—এত অাদরের খকেীকে আমি বিমাতার হাতে তুলিয়া দিতে পারিব না। আমার জ্যেঠা সহোদরা, তিনি বিধবা, নিজ শবশরোলয়ে অবস্থান করিতেছিলেন, তাঁহাকে আনাইয়া খচুকীর লালন-পালনের ভার তাঁহারই হস্তে অপাণ করিলাম। এ দিকে আত্মীয়-বন্ধরা বিবিধ প্রকারে আমায় বুঝাইতে লাগিলেন—“এই মোটে বত্ৰিশ বছর তোমার বয়স, সারাটা জীবন পড়ে রয়েছে, কি ক’রে তোমার কাটবে ? তোমার দিদিই বা নিজের সংসার ছেড়ে কত দিন তোমার কাছে থাকতে পারবেন ? বিমাতা হলেই যে একটি আসত রাক্ষসী হবে, এমনই বা কি কথা ? সে রকম হয় কারা ? হারা ছোট-লোকের ঘরের মেয়ে। ভদ্রবংশের একটি ডাগর দেখে মেয়ে বিয়ে করে আন, সে তোমার মেয়েকে নিজ সন্তানের মতই লালন-পালন করবে—তোমার সংসার বজায় রাখবে।” -ॐउठानि ॐऊानि । সাত আট মাস থাকিয়া, দিদিও ফিরিয়া যাইবার জন্য ব্যস্ত হইয়া পড়িলেন । তখন কি করি, অগত্যা বিবাহই করিয়া ফেলিলাম। দিদি নববধকে সংসার বুঝাইয়া দিয়া অবস্থানে প্রস্থান কুরিলেন। সৌভাগ্যবশতঃ যাঁহাকে ঘরে আনিলাম, তিনি মাতৃবং স্নেহাদরেই আমার খাকীকে বাকে তুলিয়া লইলেন । এ পক্ষেও আমার দুইটি কন্যা ও তিনটি পত্র জন্মগ্রহণ করিল। পত্রে তিনটি আপনাদের আশীব্বাদে জীবিতই আছে, কিন্তু কন্যা দুইটিকে তাহদের শৈশবেই যমের মুখে তুলিয়া দিয়াছি। so দই এক মাস কাটিয়া গেল, জামাতার কোনও সংবাদ নাই। গত পণিমা-রাত্রিতে বাবা সত্যনারায়ণের সিন্নী দিয়াছি। গহিণী পথানীয় কালী-মন্দিরে মানত করিয়াছেন, জামাতা ফিরিলেই ষোড়া পাঠা দিয়া মা'র পজো করিবেন। পাড়ার বর্ষীয়সী জ্ঞানদা-ঠাকুরাণী প্রতিদিন সন্ধ্যাবেলায় আসিয়া গহিণী ও খাকীকে “নীলকুল বাস দেবের কথা” শনাইয়া যাইতেছেন—আমিও শুনিতেছি। ইহার ফলশ্রুতি এই প্রকার—“ধন না থাকলে তার ধন হয়, পতে না থাকলে তার পতে হয়, বন্দী থাকলে ছাড়ান পায়, দারের সুসমাচার নিকটে