পাতা:গল্প-গ্রন্থাবলী (প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়) তৃতীয় খণ্ড.djvu/৩৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

● গল্পপ-গ্রন্থাবলী তথায় পেপছিয়া দেখিলেন যে, উদ্যানবাটিকার প্রবেশপথ মন্মর প্রস্তরে গঠিত। একজন মসীবণ হাবসী আবার রক্ষা করিতেছে। তাহার ওপরের ওষ্ঠ উলটাইয়া নাসিকা পশ করিয়াছে। নিনের ওষ্ঠ ঝালিয়া নভদেশে নামিয়াছে। বহুসংখ্যক পশ্চম একত্র সেলাই করিয়া সে নিজ পরিধেয় বসত্ৰ নিম্মাণ করিয়াছে। নিকটস্থ এক দাড়িশব বক্ষে একশত মণ পাথরের এক ঢাল ঝুলিতেছে। একটি শামশাদ বক্ষে পশ্চাশ মণ লোহার নিশ্চিমত তাহার তরবারি ঝুলিতেছে। পাথরের শয্যায়, পাথরের বালিশ মাথায় দিয়া সেই হাবসী শয়ন কবিয়া নিদ্রা যাইতেছে। রাজকুমার ঈশ্বরের নাম লইয়া ধীরে ধীরে নিঃশব্দে উদ্যান মধ্যে প্রবেশ করিয়া একটি বক্ষে অশ্বকে বন্ধন করিলেন। তৎপরে উদ্যানে ভ্রমণ করিতে লাগিলেন। উদ্যানের শোভা পরম রমণীয়। দেখিলেন কতকগলি হরিণ চরিতেছে। তাহাদের শ,ভগগুলি সোনা দিয়া বাঁধানো। সোনার কাজ করা মখমলের আঙ্গিয়া তাহাদের পৃষ্ঠদেশে শোভা পাইতেছে। প্রত্যেকের গলায় একখানি করিয়া রেশমী রমাল বাঁধা রহিয়ছে। দেখিয়া রাজকুমারের মনে বিস্ময় উৎপন্ন হইল। ভাবিলেন—“কে এ উদ্যানের মালিক ? সে ত অত্যন্ত সোঁখীন লোক দেখিতেছি।” এইরুপ ভাবিতে ভাবিতে তিনি সম্মুখে অগ্রসর হইতে লাগিলেন, কিন্তু হরিণগণ আসিয়া তহির পথরোধ করিয দাঁড়াইল। হরিণগুলির চক্ষ বিনতিপণ, যেন তাহারা রাজকুমারকে বলিতে লাগিল—”এ পথে যাইও না যাইও না।” কিন্তু রাজকুমার ভীত হইবার পাত্র নহেন। তিনি হরিণগণকে ঠেলিয়া অগ্রসর হইলেন। কিছর দরে যাইয়া দেখিলেন, একটি সন্দের গহ রহিয়াছে। বাটীর চতুদিকে বিবিধ ফলের বাগান। আশচয্য আশচয্য সন্দের পপসকল সেখানে প্রস্ফঢিত রহিয়াছে। তাহদের গন্ধও অভিনব প্রকারের। রাজকুমার সে বাটীর এক দুবার দেখিতে পাইয়া নিভয়ে সেই পথে ভিতরে প্রবেশ করিলেন। কয়েকটি সমসজিত কক্ষ অতিক্ৰম করিয়া দেখিলেন, একটি কক্ষে একজন অপ্সরাসদশী রুপবতী কামিনী মখমল ও কিংখাব গালিচার উপর বসিয়া আছে। তাহাকে দেখিয়াই রাজকুমারের মন প্রীতি-প্রফুল্ল হইয়া উঠিল। সেই কামিনীও রাজকমারের অলৌকিক রপে দশনে অস্থির হইয়া পড়িল । রাজকুমারকে দেখিবামাত্র সেই তরণী উঠিয়া দণ্ডায়মান হইয়া তাঁহার হস্ত ধারণ করিফা বলিল –“হে শুভদশন, তুমি কে ? তোমার আগমনে আমি অতীব পালকিত হইলাম। তুমি কোথা হইতে আসিলে আর কোথাই বা যাইবে ?” রাজকুমার সেই কামিনীর পাশবদেশে উপবেশন করিয়া নিজের তাবৎ বাত্তান্ত কহিলেন। শুনিয়া রমণী কহিল—“হে প্রিয়, এ কঠিন কায্যে কেন প্রবৃত্ত হইলে ? এখনও এ পণ পরিত্যাগ কর। সে পথে কোন মনুষ্য অদ্যাবধি যাইতে পারে নাই। তুমি এইখানেই থাক, কোথাও যাইও না। নিজ করকমল আমার গলায় বেস্টন করিয়া ঈশবরকে ধন্যবাদ দাও যে, আমার তুল্য সাকুমারী ললনা প্রাপ্ত হইলে। প্রিয়তম, তোমার মখেদশনে আমি পাগলিনীপ্রায় হইয়াছি। এইখানে অবস্থান করিয়া অামার সহিত সুখসক্ষেভাগে কালাতিপাত কর।” রাজকুমার কাঁহলেন—“প্রিয়ে, তোমার নাম কি ?” রমণী কহিল—“আমার নাম লতিফাবান । তুমি বাকাফ নগরে গেলে যে অভিপ্রায় পণ্য হইত, আমি এইখানে বসিয়াই তাহা পণ করিয়া দিব। আমি যাদবিদ্যার অধিকারিণী। এ সংসার সখের আগার। এস আমরা পরপর প্রেমালিঙ্গনে বন্ধ হইয়া পথিবীতে সবগাসখ উপভোগ করি।” এই বলিয়া লতিফাবান রাজকুমারের প্রতি বিলোল কটাক্ষ নিক্ষিপ্ত করিল। མ་༣ বাদশাজাদা অলমাশ কহিলেন—“সন্দোর, আমার প্রতিজ্ঞা এই যে, যত দিন না কৈমশ শাহ বাদশাকে সপরিবারে বন্দী করিতে পারি, এবং দটো মেহেরঙ্গোজকে ধাবমান অশ্ব