পাতা:গল্প-গ্রন্থাবলী (প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়) তৃতীয় খণ্ড.djvu/৩৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

චූද් গল্প-গ্রন্থাবলী প্রধান সেনাপতি চলমাক নামক মহাযোখাকে ডাকিয়া সসৈন্যে বন্ধেযাত্রা করিতে আদেশ দিলেন। চলমাক সহস্ৰ সহস্ৰ হাবসী সৈন্য সঙ্গে লইয়া বাহির হইলেন। রাজকুমারের নিকটে আসিয়া কহিলেন—“ওরে নিবন্ধি, তুই গোটকতক হাবসী সৈন্য মারিয়াই কি নিজেকে মহাবীর বলিয়া মনে করিতেছিস ? তোর শক্তি কতখানি এবার আমি দেখিব।” রাজকুমার এই দাবচন শুনিয়া ক্ৰোধে সালেমান তরবারি বাহির করিয়া হাবসীগণের মস্তক ছেদন করিতে আরম্ভ করিলেন। তাহ দেখিয়া ক্ৰোধে চলমাক এক বশ ঘরাইয়া রাজকুমারকে লক্ষ্য করলেন, এবং সঙ্গে সঙ্গে রাজকুমারকে ধরিবার জন্য ধাবিত হইলেন । রাজকুমার সালেমানী তরবারি দ্বারায় চলমাককে এমন আঘাত করিলেন যে, তৎক্ষণাৎ তাহার প্রাণবায় বাঁহগত হইল। সেনাপতি নিহত দেখিয়া হাবসী সৈন্যগণ উদ্ধশবাসে পলায়ন করিল। * এই সমাচার তুমতাকের নিকট পেপছিবামাত্র ক্ৰোধে ও অপমানে তিনি অগ্নিসমান : উঠিলেন। আজ্ঞা দিলেন সৈন্যগণ সজিত হও, আমি স্বয়ং এবার যন্ধেযাত্রা יין পরদিন প্রভাতে, প্রলয়ের মেঘপুঞ্জ সদৃশ, অগণ্য হাবসী সৈন্য সঙ্গে লইয়া, স্বয়ং তুম্মমতাক যন্ধক্ষেত্রে অবতীণ হইলেন। কিছুক্ষণ যন্ধের পর, রাজকুমার সহস্ৰাধিক হাবসী সৈন্য বধ করিলেন বটে, কিন্তু অত্যiধক পরিশ্রমে তাঁহার দেহ দাবল হইয়া পড়িল। ভাবিলেন, এবার বুঝি রণে পরাজয় মানিতে হয়। একা অত লোকের সঙ্গে কতক্ষণ যন্ধে করবেন ? এমত সময়ে দেখা গেল, ব্যাঘ্ররাজ দুই সহস্র ব্যাঘ্র সৈন্য লইয়া, বজ্ৰগম্ভীর স্বরে হহেনস্কার করিতে করিতে, রাজকুমারের সাহায্যাথ যন্ধক্ষেত্রে আসিয়া অবতীণ হইলেন। ব্যাঘ্রগণ হাবসী সৈন্যকে ধরিষা সদ্য সদ্য ভক্ষণ করিতে লাগিল । ইহা দেখিয়া রাজকুমারের সাহস ও বলবন্ধি হইল। তিনি বিগণ উৎসাহের সহিত সুতুললে ধনবোণের সাহায্যে সহস্ৰ সহস্ৰ হাবসী সৈন্য নিপাত করিতে l তুমিতাক ইহা দেখিয়া ভাবিলেন—“নিশ্চয়ই এ মনুষ্য নহে—কোনও দৈত্য বা দানব হইবে। মনুষ্য হইলে কি একাকী এত হাবসীকে বধ করিতে পারিত ? অার ব্যাঘ্ররাজই বা আসিয়া সাহায্য করে কেন ? অতএব যুদ্ধে আর মঙ্গল নাই। পলায়ন কবিয়া দাগমধ্যে আশ্রয় লই।” এই চিন্তা করিয়া তুমিতাক সেনাগণকে পলায়ন করিতে আদেশ দিলেন । তাঁহার কথা শেষ হইতে না হইতেই পয়গম্বর ইসাক প্রদত্ত এক শর আসিয়া তাহার মস্তকে বিদ্ধ হইল এবং তিনি ভূমিতলে পতিত হইয়া প্রাণত্যাগ করলেন। এইরপে হাবসীগণকে জয় করিয়া ব্যাঘ্ররাজের সহিত রাজকুমার দরগমধ্যে প্ররেশ করিলেন। বিজেতাকে রাজা জানিয়া হাবসীগণ তাঁহাকে সিংহাসনে সমপণ করিল। নানাবিধ খাদ্যদ্রব্য ও সারা আনিয়া তাঁহার সম্মুখে উপস্থিত করিল। তিনি ব্যাঘ্ররাজের সহিত সে সমস্ত পানাহার করিয়া, বিশ্রামসুখে সেই দগে দুই তিন দিন কাটাইলেন । তুমিতাকের একটি মাত্র কন্য ছিল। তিনি তাহাকে আনাইয়া, মহম্মদী কলমা শিখাইয়া, তাহাকে পবিত্র মসলমান ধর্মে দীক্ষিত করিলেন। সে কন্যা অতীব সন্দেরী। বলিলেন —“কুমারি, তুমি এখন তোমার পিতার পথলাভিষিক্ত হইয়া রাজ্য প্রতিপালন কর।” এই বলিয়া তুমিতাক কন্যাকে সিংহাসনে বসাইয়া, ব্যাঘ্ররাজকে অনুরোধ করিয়া এক ফৌজ ব্যায় সৈন্য তাহার রক্ষাথ রাখিয়া, রাজকুমার বাকাফ অভিমুখে যাত্রা করিলেন।