পাতা:গল্প-গ্রন্থাবলী (প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়) তৃতীয় খণ্ড.djvu/৩৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ObyÚ গল্প-গ্রন্থাবলী বোধ হয় মরিয়া যাইবে। কিন্তু অভাগিনী মরিল না। সেই হাবসীর চরণ চকেন করিতে লাগিল এবং বলিতে লাগিল—“কি করিব, আমার স্বামী আজ দেরী করিয়া নিদ্রা গিয়াছে তাই আসিতে একট বিলম্ব হইল। আমার কোনও অপরাধ নাই, প্ৰাণেশ্বর আমাকে মাজজনা কর।” 續釁 তখন হাবসী বলিল—“আমি তোকে কতদিন বলিয়াছি তোর স্বামীটাকে বিষ খাওয়াইয়া মারিয়া ফেল । তাহা ত তুই শনিবি না। সে হতভাগা বাঁচিয়া থাকিতে আমাদের সখে নাই।” এই বলিয়া বেগমকে আরও প্রহার করিতে লাগিল । বেগম তখন বলিল—“নাথ, ক্ষমা কর। আমি কলাই আমার স্বামীকে বিষপান করাইয়া মারিয়া ফেলিব। তুমি তখন নিকটকে রাজ্য ও আমাকে অধিকার করবে।” ইহা শনিয়া হাবসী ক্ষান্ত হইল এবং তাহাকে হাত ধরিয়া টানিয়া কুটীরে লইয়া গেল। আমিও দর হইতে দাঁড়াইয়া কুটীরের ভিতর দেখিতে লাগিলাম। আমি আর থাকিতে না পারিয়া, সিংহনাদ করিয়া, তরবারি হতে হাবসাঁকে আক্ৰমণ করিলাম। হাবসাঁও চীৎকার করিয়া, অস্ত্র গ্রহণ করিয়া আমাকে আক্ৰমণ করিল। তাহার চীৎকার শুনিয়া তাহার ভূত্য চারিজন হাবসী সশস্ত্র হইয়া আগমন করল। তাহারা পাঁচজন, আমি একজন। তরবারি যুদ্ধ চলিতে লাগিল। আমি ক্ৰমে ক্ৰমে ভূত্যগণের মধ্যে তিন হাবসীকে যমালয়ে প্রেরণ করিলাম। তখন চতুর্থ হাবসী ভূত্য প্রাণভয়ে পলায়ন করিল। আমার বেগমের সব্বনাশকারী হাবসীর সঙ্গেই আমার যন্ধে চলিতে লাগিল। আমি রক্তক্ষয়ে অত্যন্ত দৰবল হইয়া পড়িয়ছিলাম। তথাপি হাবসীর হস্ত হইতে তরবারি কাড়িয়া লইয়া, দই হতে দুই তরবারির বারায় যুদ্ধ করিতে লাগিলাম। এতক্ষণ গলবেগম নিকটে দাঁড়াইয়া ছিল। সে ইহা দেখিয়া, পশ্চাৎ হইতে আমাকে এমন ধাক্কা মারিল যে আমি ভূমিতে পড়িয়া গেলাম। তখন হাবসী সুবিধা পাইয়া আমার বকে চড়িয়া বসিল। বেগম নিজের কোমর হইতে এক ছাঁর বাহির করিয়া, আমাকে হত্যা করিবার জন্য হাবসীর হাতে দিল। আর এক মহত্তে হইলেই আমাকে যমালয় দশন করিতে হইত। এমন সময় আমার প্রভুভক্ত কুকুর এক লম্ফ দিয়া হাবসীর টটি কামড়াইয়া ধাঁরল। হাবসীর হাতের ছাঁর হাতেই রহিয়া গেল। সে আমার পাবে ভূমিতে পড়িয়া গেল। আমি তখন উঠিয়া হাবসাঁকে ও গলকে বধিয়া ফেলিলাম, তাহাদিগকে বধিয়া রাজবাটীতে লইয়া আসিলাম। সেই হাবসীর মাথা কাটিষা এক থালায় রাখিয়া দিলাম। তুমি থালায় সেই হাবসীর মন্ডে দেখিয়াছ। আমার কুকুরটিকেও দেখিয়াছ। ঐ কুকুরই আমার জীবনদাতা। তাই উহার এত আদর। আর গলকে যে দণ্ড দিতেছি, তাহা উহার মহাপাপের তুলনায় লঘদণ্ড বলিতে হইবে। আর যে হাবসী ভূত্য পলাইয়া গিয়াছিল, সে কৈমশে শাহ বাদশাহের দেশে লুকাইয়া আছে। ইহাই আমার জীবনের হদয়বিদারক ইতিহাস । দশম পরিচ্ছেদ সনোবর শাহ এই বক্তাত শেষ করিয়া রাজকুমারকে বললেন—“হে বিদেশি, এখন তুমি তোমার প্রশ্নের উত্তর অবগত হইলে, এখন নিজের প্রতিজ্ঞা পালন কর। আমি তোমার মস্তকটি কাটিয়া লইব।” রাজকুমার বলিলেন—“দেখিতেছি আমাকে বধ করিবার জন্য আপনার সম্পণে ইচ্ছা; আমিও আহাতে পশ্চাৎপদ নহি। কেবল এক বিষয়ের মীমাংসা এখনও অবগত হই নাই। আপনার সঙ্গে কথা ছিল, আমার সন্দেহ সম্পর্ণেরপে ভঞ্জন করিয়া আমার মাথা কাটিয়া লইবেন। অতএব হে দেশাধিপতি, সেই চতুর্থ হাবসী ভূত্য এত লোক থাকিতে মেহেরগেজের সিংহাসন তলেই বা লক্কোইত হইল কেন এবং মেহেরগেজই বা কি কারণে