পাতা:গল্প-গ্রন্থাবলী (প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়) তৃতীয় খণ্ড.djvu/৩৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সতীদাহ 9bసి তাঁহার আগমনবাত্তা শ্রবণ করিয়া শামশাদলালপোষ পরমানন্দে প্রত্যুগমন করিয়া তাঁহাকে গহে লইয়া আসিলেন। রাজ্যে আনন্দোৎসব পড়িয়া গেল। বাদশাহ এত দান ধ্যান আরম্ভ করিলেন যে, দেশের সমস্ত কাঙাল নেহাল হইয়া গেল। জমিলাবানকে পত্রবধরপে পাইয়াও তাঁহার আনন্দের সীমা রহিল না। একদিন মহতী সভা আহত হইল। তথায় রাজকুমার গহত্যাগের দিন হইতে অদ্যবিধি নিজের সমস্ত বক্তান্ত বর্ণনা করিলেন। অবশেষে তিনি সেই হাবসাঁকে ও মেহেরগেজকে হাত পা বধিয়া রাজসভায় উপস্থিত করিয়া পিতাকে বলিলেন—“এই হাবসীর চক্রান্তে, এই মেহেরগেজ আপনার সাত পত্রকে বধ করিয়াছে। এখন ইহাদের উপযুক্ত দণ্ড বিধান করন।” বাদশাহ তখন হাবসাঁকে বন্ধদশায় সভার প্রাগণে ফেলিয়া, তাহার উপর দিয়া চারজন অশবারোহীকে অশব ছটাইতে আদেশ করিলেন। একে একে চারি অব হাবসীর উপর দিয়া ছটিলে তাহার অঙ্গ খণ্ডে খণ্ডে কাটিয়া গেল এবং সে পঞ্চত্র প্রাপ্ত হইল। মেহেরঙ্গেজ ভাবিতেছিল, আমারও বোধহয় এই দশা হইবে। ভয়ে সে উচ্চৈস্বরে ক্ৰন্দন করিয়া উঠিল। তাহার অবস্থা দেখিয়া সভাসদগণের মন দ্রবীভূত হইল। তাহারা করযোড়ে বাদশাহের কাছে প্রার্থনা করিল—“এ অতি পাপীয়সী বটে। অনেক নিরপবাধী মনুষ্যকে বধ করিয়ছে। তথাপি এ রাজবংশসম্ভূত—বিশেষতঃ সীলোক। দয়া করিয়া ইহাব প্রতি লঘেদণ্ড বিধান করন।” বাদশাহ তখন বলিলেন—“আমার পর যখন উহাকে বিবাহ করিয়া আনিয়াছে, তখন ও আমার পত্রেরই সম্পত্তি। উচ্চার প্রতি যাহা বিধান হয, করিতে আমার পত্রকেই ভার দিলাম।” বাদশাজাদা মেহেরঙ্গেজের রপজ্যোতি দেখিয়া সভার প্রার্থনা শুনিয়া, তাহাকে প্রাণে না মারিয়া জমিলাবানরে দাসী করিয়া রাখলেন। কয়েক বৎসর পরে শামশাদলালপোষ সবগারোহণ করিলেন। অলমাশ তখন বাদশাহ হইয়া জমিলাবানরে সহিত সুখে রাজ্যভোগ করিতে লাগিলেন। সতীদাহ (जज्रा घछैना) হিন্দুধৰ্ম্ম-বিহিত বিভিন্ন প্রকার অনুষ্ঠানগুলির মধ্যে, মত স্বামীর চিতায় বিধবার স্বেচ্ছাকৃত আত্মজীবন-বিসজনই সব্বাপেক্ষা শোচনীয় ব্যাপার। - এই ভয়ঙ্কর প্রথাটি যে অতি প্রাচীন, তাহা ডাইওডোরস লিখিত গ্রন্থেই জানা যায়। তিনি লিখিয়াছেন— “অ্যান্টিগোনস ও ইউমিনিস যখন পরপরের সহিত যথে প্রবক্ত, তখন একদিন ইউমিনিস, অ্যান্টিগোনসের নিকট নিজ সৈন্যের মতদেহগুলি সৎকার কারবার জন্য অনুমতি গ্রহণ করেন। এই সময়ে একটি অদভূত কলহ উপস্থিত হইয়াছিল। মতের মধ্যে একজন ভারতীয় সৈনিক ছিল, তাহার দই দী-উভয়েই স্বামীর সহিত আসিয়াছিল। কনিষ্ঠা সন্ত্রীকে সে অলপদিন পবেই বিবাহ করিয়াছিল। বিধবার বাঁচিয়া থাকা ভারতীয় শাপানমোদিত নহে। স্বামীর চিতায় পড়িয়া মরিতে অসম্মত হইলে আমরণ তাহাকে নিন্দিত ও অপমানিত জীবন যাপন করিতে হয়। সে পনেরায় বিবাহ করতে পারে না,