পাতা:গল্প-গ্রন্থাবলী (প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়) তৃতীয় খণ্ড.djvu/৪০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

రిఫిట్ర গল্প-গ্রন্থাবলী নিষেধ করিলেন। ক্ৰোধ কিয়ৎ পরিমাণে প্রশমিত হইলে বলিলেন, “ভুল করনি—এ তোমারই শয্যা বটে। আমায় আপনি আপনি বোলো ন-আমি তোমার পল্লী। চোখের ঘমে ছাড়লো ?—একটু বেড়াবে এস না ।” সে সমস্ত মহলটাই রাজকন্যার—সে রাত্রে সেখানে আর জনপ্রণুী নাই। রাজকন্যা প্রথমে স্বামীকে স্বীয় পাঠমন্দিরে লইয়া গেলেন। তথায় কাব্য অলঙ্কার পরাণ ইতিহাস নানা গ্রন্থ রক্ষিত আছে—তাহার মলাটগুলি সোণা রপোর পাতে মোড়া, হীরা মোতি চনী পান্না খচিত। কালিদাস একখানি পুথি তুলিয়া লইয়া বলিলেন, “এটা কি গো ? বেশ চকচক করছে ত!" রাজকন্যা বলিলেন, “ও একখানি কাব্য।" কালিদাস জিজ্ঞাসা করিলেন, “কাব্য কি ? এতে কি হয় ?” রাজকন্যা বলিলেন, "পড়তে হয় ।” কালিদাস বলিলেন, “পড়তে হয় । ও৪—বঝেছি—ক-খ’র বই। আমি ছেলেবেলায় ক-খ শিখেছিলাম, এখন ভুলে গেছি।” রাজকন্যা কোনও উত্তর না দিয়া, বিরক্তিভরে কক্ষান্তরে চলিলেন। কালিদাসও পশচাৎ পশ্চাৎ চলিলেন। তিনি যাহা দখেন, তাহারই সম্পবন্ধে জিজ্ঞাসা করেন—“এটা কি গো ? এতে কি হয়?” রাজকন্যা মনে ভাবিতে লাগিলেন, “এই মগধের রাজপত্র। যাহা দেখিতেছে, সবই ইহার পক্ষে নতন ঃ জীবনে এ কি কিছুই দেখে নাই ?” পবে বাজকন্যা চিত্রশালায় প্রবেশ করিলেন। বড় বড় চিত্রকরগণ কতৃক অঙ্কিত রামায়ণ মহাভারতাদির নানা চিত্র তথায় শোভা পাইতেছে। কালিদাস যে ছবিই দেখেন, তাহারই সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করেন—“এটা কি গো ?”—রামায়ণ মহাভারতের কোন চিত্রই কালিদাস চিনিতে পারিলেন না। অবশেষে নবদম্পতী একখানি বান্দাবন-চিত্রের সম্মখে আসিয়া দাঁড়াইলেন। শ্ৰীকৃষ্ণ কদমতলায় বসিয়া রাধিকার মাত্তি ধান করিতেছেন—কিয়ন্দরে বড় বড় গর চরিতেছে। এই প্রথম কালিদাস উচ্ছসিত হইয়া উঠিলেন। বলিতে লাগিলেন—“আহা !—কিবে গাইগনি ! কিবে বাঁট —আঃ, ইচ্ছে কবছে এবটা বোগানো নিয়ে চ্যাঁকচোঁক করে দধে দই।” রাজকন্যা জিজ্ঞাসা করিলেন, “দ্ধ দইতে জান নাকি ?” কালিদাস বলিলেন, “তা আর জানিনে —গর চরিয়ে আর দধে দুয়েই ত এত বড়টা হলাম ।’ রাজকুমারী বিস্মিতভাবে স্বামীর মুখের পানে চাহিলেন। কৌশলে তাঁহার পরিচয় জিজ্ঞাসা করিলেন। কালিদাসের জন্মেতিহাস, চড়ামণির সহিত তাঁহার সাক্ষাৎ ও কথোপকথন—সকল বক্তান্ত শনিয়া, ললাটে করাঘাত করিয়া নিকটস্থ পৰ্য্যাকপ্রান্তে তিনি বসিয়া পড়িলেন। তখন সহসা সেই বাল্যকালের কথা-চড়ামণির সহিত কলহ—তাঁহার মনে পড়িয়া গেল। ৰঝিলেন, চড়ামণিই তাঁহার এই সব্বনাশ ঘটাইয়াছে। ক্ৰোধে ক্ষোভে অভিমানে রাজকন্যা আত্মহারা হইয়া পড়িলেন। সব্বাঙ্গে যেন বশিচক দংশনের জবালা অনুভব করিতে লাগিলেন। মনে হইতে লাগিল—এই মুখ ব্যবরের সঙ্গে চিরজীবন কি করিয়া আমি কাটাইব । অদরে ভিত্তিগাত্রে একখানি তরবারি ঝুলিতেছিল, সেই দিকে হঠাৎ রাজকন্যার দটি পড়িল। চক্ষের পলকে তিনি উঠিয়া সেই তরবারি গ্রহণ করিয়া, কালিদাসের শিরশেছদন করিতে উদ্যত হইলেন। & কাসিদাস দই লক্ষে পিছাইষা গিয়া বলিলেন, "এ কি ! আমায় কার্ট কেন ?”