পাতা:গল্প-গ্রন্থাবলী (প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়) তৃতীয় খণ্ড.djvu/৪১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

काछिन्न विष्ठान्न 8’SS. দটি যোড় করিয়া, কাতর নয়নে, ইঙ্গিতে তাহাদের দয়া ভিক্ষা করিতে লাগিল । সন্দার মহাশয় অপেক্ষণ পরেই আসিয়া পেপছিলেন। সকলেই তহিকে সম্মান করিতেছে বুঝিতে পরিয়া, আবদলে গিয়া তাঁহার পায়ে লটাইয়া পড়িল । অনেকেই তাঁহাকে পরামর্শ দিল, ইহাদের হাতে পায়ে দড়ি বধিয়া সমুদ্রে ফেলিয়া দেওয়া হউক। কিন্তু সন্দার এ পরমশ গ্রহণ করিলেন না। বলিলেন, “মিছামিছি মনুষ্য হত্যা করিয়া কি হইবে ? বরং ইহাদের দ্বারা অনেক কাজ পাওয়া যাইতে পারে। চল, ইহাদের বস্তর ভিতর লইয়া চল। ইহাদের কাজ দেওয়া যাইবে-খাটিবে খাইবে।” বতির ভিতর লইয়া গিয়া, সন্দারের লোকেরা দইখানি কুড়ল আনিয়া ইহাদের হাতে দিয়া, দুইটা শুকনা গাছ দেখাইয়া ইঙ্গিতে বলিল, “এই গাছ দুইটি তোমরা কাটিয়া ফেল, কাজ শেষ হইলে তবে খাইতে দিব।”—বলিয়া তাহারা চলিয়া গেল। আবদলে কুড়লখানা লইয়া, গাছের গোড়ায় কপাকপ কোপ বসাইতে লাগিল। তাহার দেহে বিপুল শক্তি-এ সকল কায্যে সে বিলক্ষণ অভ্যস্ত। সারাদিনে গাছটাকে ভূমিসাৎ করিয়া শাখাগলোও একে একে কাটিয়া পথক করিয়া ফেলিল। নবাব বাহাদর প্রাণের দায়ে, কুড়লখানি উঠাইয়া গাছে কোপ দিতে লাগিলেন বটে, কিন্তু একটা কোপও গাছের গড়িতে ভাল করিয়া বসিল না। দশ মিনিট অতীত হইতে না হইতেই, তাহার সব্বাঙ্গে দন্দর ধারায় ঘাম ছুটিল; হাত ব্যথা হইযা গেল, তিনি কুড়ল ফেলিয়া, বসিয়া বিশ্রাম করিতে লাগিলেন। অনেকক্ষণ বিশ্রাম কবিবার পর আবার সর করিলেন ; কিন্তু অধিকক্ষণ বুড়ল চালাইতে পারিলেন না। ক্ৰমে দিবা অবসান হইল। સ્વછે সন্দর্ণরের লোকেরা আসিয়া আবদলের কাষ দেখিয়া খাব খসী হইল। তাহার পিঠ থাবড়াইয়া সেই খাসী প্রকাশ করিল। নবাবেব গাছটা অন্ধেকও কাটা হয় নাই দেখিয়া রাগিয়া তাঁহাকে এক লাথি মারিষা বলিল, “তুই পাজি কোনও কমের নোস ! কেবল ভুড়িই সার।” আবদলকে তাহারা আদর করিয়া কতকগুলি ফল, ও খানিকটা মাংস খাইতে দিল । নবাবকে গোটাকতক নিকৃষ্ট ফল মাত্ৰ খাইতে দিল, মাংস মোটেই দিল না। এইরুপে দিনের পর দিন কাটিতে লাগিল। আবদুলকে তাহারা ষে কাযের্ণ লাগায় তাহা যতই পরিশ্রমসাধ্য হউক না কেন, আবদলে তাহা সচাররপে সম্পন্ন করে। নবাবকে যে কাৰ্য্যই দেয় কোনটাই তিনি সসপন্ন করিতে পারেন না। ফলে, আবদলের খব আদর হইল। সে ভাল খায়, ভাল পরে, ভাল ঘরে থাকিতে পায়। নবাবকে খাইতে দেয় অন্য সকলের উচ্ছিল্ট-—কদয় । পেটের জবলায় নবাব তাঁহাই খাইয়া কোনও মতে জীবনধারণ করেন । এইরুপে কিছুদিন কাটিলে পর, নবাব বাহাদরের শরীরে বিশেষ পরিবত্তন লক্ষিত হইল। তিনি এখন আর সেরাপ পথািলকায় নাই। তাঁহার চব্বি গলিয়া ভুড়ি ধসিয়া, দেহের আয়তন অনেক কমিয়া গিয়াছে। খাইবার সময় উপস্পিৰ্থত হইলে, ক্ষুধায় তিনি অস্থির হইয়া উঠেন। রাত্রে কুড়ে ঘরে চেটাইয়ের উপর শয়ন করিয়া, অন্ধ ঘণ্টা মধ্যে গভীর নিদ্রায় অভিভূত হইয়া পড়েন--এবং প্রায়ই একথমে তাঁহার রাত কাটিয়া যায়। প্রভাতে উঠিয়া দেহে নতন বল অনুভব করেন, এবং এখন পবোপেক্ষা অধিক পরিশ্রম করিয়াও কাতর হইয়া পড়েন না। এতদিনে ইহাদের ভাষাও তিনি কিছল শিখিয়া ফেলিয়াছেন। আবদলেও শিখিয়াছে।