পাতা:গল্প-গ্রন্থাবলী (প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়) তৃতীয় খণ্ড.djvu/৪২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বীরবলের গল্প BSE দদশায় পতিত হইয়া ষুে শিক্ষালাভ করিয়া আসিলেন, তাহা যেন আর ভুলিবেন না। আর এক কথা। আপনি অতি অন্যায়পবেক এই গরীবের ঘর দয়ার ও জীবিকার একমাত্র উপায়, ইহার শরের ক্ষেত জনালাইয়া দিয়াছিলেন। ইহার ঘর দয়ার নিজস্বয়ে আপনাকে নিম্মর্ণণ করিয়া দিতে হইবে। এবং ক্ষতিপরেণস্বরুপ আপনি উহাকে ৫oo, পাঁচ শত টাকা দিবেন। এই সত্তে" আপনি সম্মত হইলেই আপনাকে ছাড়িয়া দিব, আপনি গহে যাইতে পারবেন।” নবাব বাহাদর তৎক্ষণাৎ কাজে সাহেবের আদেশ প্রতিপালনে সন্মত হইলেন। এবং তাঁহাকে অভিবাদন করিয়া, বন্ধভাবে আবদলের হস্ত ধারণ করিয়া, আদালত-গহ হইতে বাঁহগত হইলেন। বীরবলের গল্প በ Jaቑ በ কথিত আছে আকবব বাদশাহের সভাসদ, রাজা বীরবল অত্যন্ত চতুর, সরসিক ও সপষ্টবক্তা ছিলেন। প্রয়োজন হইলে, স্বয়ং বাদশাহকেও তিনি দু’কথা শনাইয়া দিতে ভয় করিতেন না। বীরবলের প্রতি বাদশাহের স্নেহ ও শ্রদ্ধাও অপরিসীম ছিল । একদিন বাদশাহ দরবার বরগান্ত ( সভা বিসজান ) করিবার সময়, সে কালের প্রথ। অনুসারে উপস্থিত পাণমিত্রগণকে পান ও আতর বিতরণ করিতেছিলেন, এমন সমল অসাবধানতাবশতঃ এক ফোঁটা আতর নিমনস্থ গালিচার উপর পড়িয়া গেল। বাদশাহ হঠাৎ ঝ:কিয়, সেই আতলের ফোঁটাটি আঙুলে মছিযা তুলিয়া লইলেন। তুলিয়াই রাজা বীলবলের দিকে তাঁহার নজব পড়িল। বীববল মস্তক নত করিয়া মচকি মুচকি হাসিতেছিলেন। সভাভঙ্গের পর বাদশাহ বিশ্রামস্থানে গেলেন। কিন্তু তাঁহার মনের ভিতরে এই কথাটাই ক্ৰমাগত খচ খচ করিতে লাগিল—“কেনই, বা আমি নেহাৎ কুঞ্জষের মত সে আতরের ফোঁটাটক তুলিতে গেলাম! একজন গরীব লোক যে আতর কখনও চোখে দেখে নাই, সে ওরাপ করিলে সাজিত। কিন্তু আমি দনিয়ার মালিক আকবর বাদশা হইয়া ছি ছি বড়ই ভুল করিরা ফেলিয়াছি। বীরবল দেখিয়াছে—একদিন নিশ্চয়ই সে ইহা লইয়া আমাকে বিদ্রুপ করিবে।” এই ত্রুটিটুকু সারিয়া লইবার মানসে, পরদিন বাদশাহ হুকুম দিলেন, “রাজবাড়ীর সামনে ঐ যে জলের হাউজটা আছে, উহা খালি করিয়া, উৎকৃষ্ট আতরে ভত্তি করিয়া দাও—এবং সহরে ঢোল দাও যে, বাদশাহ প্রজাদের জন্য আতর-সত্র খলিয়াছেন, ষাহার ইচ্ছা সে আসিয়া ঘাঁট বাটি কলসী ভৰ্ত্তি করিয়া অতির লইয়া যাইতে পারে।” ঘড়া ঘড়া আতর ঢালিয়া সেই প্রকাণ্ড হাউজ ভত্তি করা হইল। দই তিন ঘণ্টার মধ্যে, হাজার হাজার লোক আসিয়া ঘটি, বাটি, কলসী ইত্যাদি ভরিয়া সেই মাল্যবান আতর সমস্তটা লুটিয়া লইয়া গেল। আকবর বাদশাহ বীরবলকে সঙ্গে লইয়া এই আতর-লটে দেখিতেছিলেন, শেষ হইলে বলিলেন, “রাজা, কেমন আনন্দ হুইল বল দেখি ?” বীরবল উত্তর করিলেন, “জাস্থাপনা, হাউজ দিয়া কি বিন্দ ঢাকা যায়?” শনিয়া বাদশাহের মনে বড়ই ক্ৰোধের উদয় হইল। তিনি রাগে কাঁপতে কাঁপতে