বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:গল্প-দশক - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
প্রতিহিংসা।
১৫৭

 এইরূপে গোপনে নানা মুখ হইতে ফুৎকার পাইয়া বিনোদের সন্দেহশিখা ক্রমেই বাড়িয়া উঠিতে লাগিল—কিন্তু সে প্রত্যক্ষভাবে কোন উপায় অবলম্বন করিতেই সাহস করিল না। এক চক্ষুলজ্জা, দ্বিতীয়তঃ আশঙ্কা, পাছে সমস্ত অবস্থাভিজ্ঞ অম্বিকাচরণ তাহার কোন অনিষ্ট করে।

 অবশেষে নয়নতার স্বামীর এই কাপুরুষতায় জ্বলিয়া পুড়িয়া বিনোদের অজ্ঞাতসারে একদিন অম্বিকাচরণকে ডাকিয়া পর্দ্দার আড়াল হইতে বলিলেন—“তোমাকে আর রাখা হবে না, তুমি বামাচরণকে সমস্ত হিসেব বুঝিয়ে দিয়ে চলে যাও!”

 তাঁহার সম্বন্ধে বিনোদের নিকট আন্দোলন উপস্থিত হইয়াছে সে কথা অধিক পূর্ব্বেই আভাসে জানিতে পারিয়াছিলেন, সেই জন্য নয়নতারার কথায় তিনি তেমন আশ্চর্য্য হন নাই; তৎক্ষণাৎ বিনোদবিহারীর নিকট গিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “আমাকে কি আপনি কাজ থেকে নিস্কৃতি দিতে চান?”

 বিনোদ শশব্যস্ত হইয়া কহিল, “না কখনই না।”

 অম্বিকাচরণ পুনর্ব্বার জিজ্ঞাসা করিলেন, “আমার উপর কি আপনার কোন সন্দেহের কারণ ঘটেছে?”

 বিনোদ অত্যন্ত অপ্রতিভ হইয়া কহিল—“কিছুমাত্র না।” অম্বিকাচরণ নয়নতারার ঘটনা উল্লেখমাত্র না করিয়া আপিলে চলিয়া আসিলেন—বাড়িতে ইজাগীকেও কিছু বলিলেন না। এইভাবে কিছুদিন গেল।

 এমন সময় অম্বিকাচরণ ইনফ্লুয়েঞ্জায় পড়িলেন। শক্ত

১৪