করিয়া তাহাকে বক্ষের কাছে টানিয়া লইয়া আবেগের সহিত চাপিয়া ধরিল এবং হঠাৎ তাহার দুই চক্ষুর রোষদীপ্তি ম্লান করিয়া দিয়া ঝর্ঝর্ করিয়া অশ্রুজল ঝরিয়া পড়িতে লাগিল। পৃথিবীর সমস্ত অন্যায় হইতে সমস্ত অপমান হইতে দুই বাহুপাশে টানিয়া লইয়া সে যেন তাহার হৃদয়দেবতাকে আপন হৃদয়মন্দিরে তুলিয়া রাখিতে চায়!
স্থির হইল অম্বিকাচরণ এখনি কাজ ছাড়িয়া দিবেন, আজ আর কেহ তাহাতে কিছুমাত্র প্রতিবাদ করিল না। কিন্তু এই তুচ্ছ প্রতিশোধে ইন্দ্রাণীর মন কিছুই সান্ত্বনা মানিল না। যখন সন্দিগ্ধ প্রভু নিজেই অম্বিকাকে ছাড়াইতে উদ্যত, তখন কাজ ছাড়িয়া দিয়া তাহার আর কি শাসন হইল? কাজে জবাব দিবার সঙ্কল্প করিয়াই অধিকার রাগ থামিয়া গেল, কিন্তু সকল কাজকর্ম্ম সকল আরাম বিশ্রামের মধ্যে ইন্দ্রাণীর রাগ তাহার হৃৎপিণ্ডের মধ্যে জ্বলিতে লাগিল।
পরিশিষ্ট।
এমন সময়ে চাকর আসিয়া খবর দিল বাবুদের বাড়ির খাজাঞ্চি আসিয়াছে। অম্বিকা মনে করিলেন, বিনোদ স্বাভাবিক চক্ষু লজ্জাবশতঃ খাজাঞ্চির মুখ দিয়া তাঁহাকে কাজ হইতে জবাব দিয়া পাঠাইয়াছেন। সেই জন্য নিজেই একখানি ইস্তফাপত্র লিখিয়া খাজাঞ্চি হস্তে গিয়া দিলেন।