পাতা:গল্প-দশক - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
অতিথি।
২১৫

বোধ করি তাহার সহপাঠিকা বালিকার নিয়ত দৌরাত্মচঞ্চল সৌন্দর্য্য অলক্ষিতভাবে তাহার হৃদয়ের উপর বন্ধন বিস্তার করিতেছিল।

 এদিকে চারুর বয়স এগারো উত্তীর্ণ হইয়া যায়। মতি বাবু সন্ধান করিয়া তাঁহার মেয়ের বিবাহের জন্য দুই তিনটি ভাল ভাল সম্বন্ধ আনাইলেন। কন্যার বিবাহবয়স উপস্থিত হইয়াছে জানিয়া মতিবাবু তাহার ইংরাজি পড়া এবং বাহিরে যাওয়া নিষেধ করিয়া দিলেন।এই আকস্মিক অবরোধে চারু ঘরের মধ্যে ভারি একটা আন্দোলন উপস্থিত করিল।

 তখন একদিন অন্নপূর্ণা মতিবাবুকে ডাকিয়া কহিলেন, “পাত্রের জন্যে তুমি অত খোঁজ করে বেড়াচ্ছ কেন? তারাপদ ছেলেটি ত বেশ। আর তোমার মেয়েরও ওকে পছন্দ হয়েছে।”

 শুনিয়া মতিবাবু অত্যন্ত বিস্ময় প্রকাশ করিলেন। কহিলেন, “সেও কি কখনো হয়? তারাপদর কুলশীল কিছুই জানা নেই। আমার একটিমাত্র মেয়ে আমি ভাল ঘরে দিতে চাই।”

 একদিন রায়ডাঙ্গার বাবুদের বাড়ি হইতে মেয়ে দেখিতে আসিল। চারুকে বেশভূষা পরাইয়া বাহির করিবার চেষ্টা করা হইল। সে শোবার ঘরের দ্বার রুদ্ধ করিয়া বসিয়া রহিল—কিছুতেই বাহির হইল না। মতিবাবু ঘরের বাহির হইতে অনেক অনুনয় করিলেন, ভৎসনা করিলেন, কিছুতেই কিছু