রমণীগণ কুলবন্ধন ছেদন করিবার জন্য উন্মুখ হইয়া আছে, শাসন তিলমাত্র শিথিল হইলেই সমাজপিঞ্জরে একটি কুলনারীও অবশিষ্ট থাকিবে না।
তাঁহার এরূপ বিশ্বাসের কারণও আছে। সে কারণ জানিতে গেলে মোহিতের যৌবন-ইতিহাসের কিয়দংশ আলোচনা করিতে হয়।
মোহিত যখন কলেজে সেকেণ্ড-ইয়ারে পড়িতেন তখন আকারে এবং আচারে এখনকার হইতে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র প্রকারের মানুষ ছিলেন। এখন মোহিতের সম্মুখে টাক, পশ্চাতে টিকি; মুণ্ডিত মুখে প্রতিদিন প্রাতঃকালে খরক্ষুরধারে গুম্ফশ্মশ্রূর অঙ্কুর উচ্ছেদ হইয়া থাকে; কিন্তু তখন তিনি সোণার চশ্মায়, গোঁফদাড়িতে এবং সাহেবীধরণের কেশবিদ্যাসে উনবিংশ শতাব্দীর নূতন সংস্করণ কার্ত্তিকটির মত ছিলেন। বেশভূষায় বিশেষ মনোযোগ ছিল, মদ্য মাংসে অরুচি ছিল না এবং আনুষঙ্গিক আরও দুটো একটা উপসর্গ ছিল।
অদূরে এক ঘর গৃহস্থ বাস করিত। তাহাদের হেমশশি বলিয়া এক বিধবা কন্যা ছিল। তাহার বয়স অধিক হইবে না। চোদ্দ হইতে পনরয় পড়িবে।
সমুদ্র হইতে বনরাজিনীলা তটভূমি যেমন রমণীয় স্বপ্নবৎ চিত্রবৎ মনে হয় এমন তীরের উপরে উঠিয়া হয় না। বৈধব্যের বেষ্টন-অন্তরালে হেমশশি সংসার হইতে যেটুকু দুরে পড়িয়াছিল