পাতা:গল্প-দশক - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৩৬
গল্প-দশক।

তৃতীয় পরিচ্ছেদ।


 মোহিতমোহনের পূর্ব্ব-ইতিহাস হইতে এই একটিমাত্র ঘটনা উল্লেখ করিলাম। রচনা পাছে “একঘেয়ে” হইয়া উঠে এই জন্য অন্যগুলি বলিলাম না।

 এখন সে সকল পুরাতন কথা উত্থাপন করিবার আবশ্যকও নাই। এখন সেই বিনোদচন্দ্র নাম স্মরণ করিয়া রাখে এমন কোন লোক জগতে আছে কি না সন্দেহ। এখন মোহিত শুদ্ধাচারী হইয়াছেন, তিনি আহ্নিক তর্পণ করেন এবং সর্ব্বদাই শাস্ত্রালোচনা করিয়া থাকেন। নিজের ছোট ছোট ছেলেদিগকেও যোগাভ্যাস করাইতেছেন এবং বাড়ির মেয়েদিগকে সূর্য্য চন্দ্র মরুদগণের দুষ্প্রবেশ্য অন্তঃপুরে প্রবল শাসনে রক্ষা করিতেছেন। কিন্তু এককালে তিনি একাধিক রমণীর প্রতি অপরাধ করিয়াছিলেন বলিয়া আজ রমণীর সর্ব্বপ্রকার সামাজিক অপরাধের কঠিনতম দণ্ডবিধান করিয়া থাকেন।

 ক্ষীরোদার ফাঁসির হুকুম দেওয়ার দুই এক দিন পরে ভোজনবিলাসী মোহিত জেলখানার বাগান হইতে মনোমত তরীতরকারী সংগ্রহ করিতে গিয়াছিলেন। ক্ষীরোদা তাহার পতিত জীবনের সমস্ত অপরাধ স্মরণ করিয়া অনুতপ্ত হইয়াছে কি না জানিবার জন্য তাঁহার কৌতূহল হইল। বন্দিনীশালায় প্রবেশ করিলেন।