পাতা:গিরিশ গ্রন্থাবলী.pdf/১৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সই ৷ =-وهه=rسته ধরণীধর মুখোপাধ্যায় সিমলায় চাকরী লইয়া যান । বিষয়ের মধ্যে কলিকাতায় একখানি বাড়ী ছিল। যখন তিনি সিমুলা যান, তখন র্তাহার পরিবারের মধ্যে স্ত্রী ও একটী বালিকা কন্যা ছিল। পরিবারের নাম মনোমোহিনী, কন্যাটীর নাম জ্ঞানদা। চাকরী-স্থানে যাইবার সময়, পরিবার সঙ্গে লইতে পারেন নাই। প্রথম যাইতেছেন, কিরূপ স্থানে কোথার থাকিবেন, তাহার ঠিকানা নাই ; মাহিনাও তেমন বেশী নয় ; সুতরাং অভিভাবকপূন্ত হইলেও একটা পুরাতন দাসীর হস্তে গৃহরক্ষার ভার সমর্পণ পূৰ্ব্বক তাহাকে বিদেশযাত্রা করিতে হইয়াছিল। বিদেশ হইতে মাসে মাসে ১৫ পনেরোটা টাকা পাঠান, তাহাতে কোন প্রকারে চলে। তিন চারি মাস পরে মাসে ১\ দশ টাকা করিয়া পাঠাইতে লাগিলেন। পুরাতন দাসী বিন্দী পাড়ায় শুনিয়া আসিল, ধরণীধরকে সাহেবের খুব ভালবাসেনতাহার মাহিন বৃদ্ধি হইয়াছে। তবে কেন ৫\পাঁচ টাকা কম পাঠাইতেছেন? ক্রমে ১^ টাকাও প্রতি মাসে আসে না। কখনও হ’মাস অন্তর ২• কুড়ি টাকা, তাহার পর ছ'মাস অন্তর ১৬ ষোল টকা, ক্রমে কমিয় অবশেষে টাকা আসা বন্ধ হইল। আর্থভাবে সংসার চলে না। মনোমোহিনী পত্র লিখিয়াও জবাব পান না। র্তাহার মনে নানা প্রকার আশঙ্কার উদয় হইতে লাগিল, যাহারা সিমল হইতে শীতকালে বাড়ী ফেরে, তাহাদের নিকট হইতে দাসী সংবাদ আনিল যে, ধরণীধর শারীরিক কুশলে’ আছেন ; বেতন বৃদ্ধি হইয়াছে, সিমলার মধ্যে তিনি একজন পরিচিত ব্যক্তি। দাসী লোকের মুখে এ কথাও অনিয়া আসিল যে, তিনি আমোদপ্রিয় হইয়। পড়িয়াছেন ; সুতরাং যে বেতনে সিমল যাত্রা করেন, যদিচ তাহার তিনগুণ বেতন বৃদ্ধি হইয়াছে, তথাপি তাহার কুলায় না। এদিকে সংসারে অত্যন্ত অর্থকষ্ট । মনোমোহিনী পুনঃপুনঃ পত্র লিখিতে লাগিলেন। অধিকাংশ পত্রের জবাব নাই; কখনও কিছু টাক পাঠান। মেয়েট লইয়া মনোমোহিনী বিশেষ কষ্টে পড়িলেন। মুখের অবস্থা হইতে কষ্টে পড়িয়া জ্ঞানদা দিন দিন মলিন হইতে লাগিল। মনোমোহিনী ভাবিলেন, হয় ত মেয়ের কোন পীড়া হইয়াছে ; পাড়ার একজন ডাক্তারের কাছে ঝি লইয়া গেল। ডাক্তার বলিল, -“রোগ কিছু নয়, ভাল করিয়া থাইতে দাও ; সারিয়া যাইবে।” হাতে টাকা নাই, মনোমোহিনী কি করিবে ; প্রতিবেশীর পরামর্শে একটা ঘর নিজের জন্য রাখিয়া বাড়ীটি ভাড়া দিলেন ; পুরাতন দাসীটকে ছাড়াইয়া দিতে বাধ্য হইলেন। কিন্তু দাসী মায়ায় পড়িয়াছিল, যাইতে পারিল না ; দেশে তাহারও কেহ আপনার ছিল না, এদিকে ও দিকে কাজকৰ্ম্ম করিত, ঘুটে বেচিত, রাত্রিকালে মনোমোহিনীর ঘরে আসিয়া শুইত । অপরকে যে বাড়ী ভাড়া দেওয়া হইয়াছে, এ সংবাদও ধরণীধরের নিকট গেল। সংবাদ পাইয়া ধরণীধরের রাগের সীমা রহিল না, র্তাহার সঙ্কল্প হইল, তিনি দেশে আসিবেন না। স্ত্রী হইয় এত অপমান করে—যাহা জানে করুক। কত মিনতি করিয়া মনেমোহিনী পত্র লিখিলেন ;–লিখিলেন, “চলে না, কি করি—তোমারই কন্যার জীবন-রক্ষার । নিমিত্ত এই কাজ করিয়াছি।” কিন্তু কোন ফল ফলিল না। ধরণীর রাগ পড়িল না। ইহার পরও ধরণী পত্ৰ পাইলেন যে, তাহার ।