পাতা:গীতবিতান.djvu/১৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৬
পূজা

যে লতাটি আছে শুকায়েছে মূল— কুঁড়ি ধরে শুধু, নাহি ফোটে ফুল,
আমার জীবনে তব সেবা তাই বেদনার উপহারে।
পূজাগৌরব পুণ্যবিভব কিছু নাহি, নাহি লেশ—
এ তব পূজারি পরিয়া এসেছে লজ্জার দীন বেশ।
উৎসবে তার আসে নাই কেহ, বাজে নাই বাঁশি, সাজে নাই গেহ—
কাঁদিয়া তোমায় এনেছে ডাকিয়া ভাঙামন্দির-দ্বারে।

১৬৬

আবার এরা ঘিরেছে মোর মন।
আবার চোখে নামে আবরণ।
আবার এ যে নানা কথাই জমে, চিত্ত আমার নানা দিকে ভ্রমে,
দাহ আবার বেড়ে ওঠে ক্রমে, আবার এ যে হারাই শ্রীচরণ।
তব নীরব বাণী হৃদয়তলে
ডোবে না যেন লোকের কোলাহলে।
সবার মাঝে আমার সাথে থাকো, আমায় সদা তোমার মাঝে ঢাকো,
নিয়ত মোর চেতনা-’পরে রাখো আলোকে-ভরা উদার ত্রিভুবন।

১৬৭

তুমি নব নব রূপে এসো প্রাণে,
এসো গন্ধে বরনে এসো গানে।
এসো অঙ্গে পুলকময় পরশে,
এসো চিত্তে সুধাময় হরষে,
এসো মুগ্ধ মুদিত দু’নয়ানে।
এসো নির্মল উজ্জ্বল কান্ত,
এসো সুন্দর স্নিগ্ধ প্রশান্ত,
এসো এসো হে বিচিত্র বিধানে।
এসো দুঃখে সুখে, এসো মর্মে,
এসো নিত্য নিত্য সব কর্মে,
এসো সকল কর্ম-অবসানে।