পাতা:গীতবিতান.djvu/৯২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চতুরঙ্গ - ঘরে বাইরে
৮০১

৯৬

পথে যেতে তোমার সাথে মিলন হল দিনের শেষে।
দেখতে গিয়ে, সাঁঝের আলো মিলিয়ে গেল এক নিমেষে।
দেখা তোমায় হোক বা না-হোক
তাহার লাগি করব না শোক—
ক্ষণেক তুমি দাঁড়াও, তোমার চরণ ঢাকি এলো কেশে।

৯৭

আমার নিকড়িয়া-রসের রসিক কানন ঘুরে ঘুরে
নিকড়িয়া বাঁশের বাঁশি বাজায় মোহন সুরে।
আমার  ঘর বলে, ‘তুই কোথায় যাবি,  বাইরে গিয়ে সব খোয়াবি!’
আমার  প্রাণ বলে, ‘তোর যা আছে সব যাক্-না উড়ে পুড়ে।’
ওগো,  যায় যদি তো যাক্-না চুকে,  সব হারাব হাসিমুখে—
আমি  এই চলেছি মরণসুধা নিতে পরান পূরে।
ওগো,  আপন যারা কাছে টানে  এ রস তারা কেই বা জানে—
আমার  বাঁকা পথের বাঁকা সে যে ডাক দিয়েছে দূরে।
এবার  বাঁকার টানে সোজার বোঝা পড়ুক ভেঙে-চুরে।

৯৮

যখন দেখা দাও নি, রাধা, তখন বেজেছিল বাঁশি!
এখন চোখে চোখে চেয়ে সুর যে আমার গেল ভাসি!
তখন নানা তানের ছলে
ডাক ফিরেছে জলে স্থলে,
এখন আমার সকল কাঁদা রাধার রূপে উঠল হাসি।

৯৯

বঁধুর লাগি কেশে আমি পরব এমন ফুল
স্বর্গে মর্তে তিন ভুবনে নাইকো যাহার মূল।