পাতা:গীতবিতান বার্ষিকী (মাঘ, ১৩৫০).pdf/৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূর্ব-স্মৃতি কানাড়া আরের গান করেন। । এ গান শুনে আমি আশ্চৰ্য্য হয়ে যাই। হিন্দী-রাগরাগিণীর তিতর কানাড়া বলে যে একটি রাগ আছে, তা আমি এরআগে জানতুন না। তারপর থেকে আমি রোজ সন্ধ্যাবেলা তার ডিস্পেন্সারিতে গিয়ে জুটতুম । তার বন্ধুবান্ধবরা এবং তার গুরু শশী কামার’ বলে একটি ওস্তাদও সেখানে আসতেন। প্রায় নিত্য এই ডিস্পেন্সারিতে নানারকম গানবাজনা শুনেশুনে আমার ক্লাসিকাল গানবাজনার কান তৈরি হল । সে-সব গান খেয়াল নয় ; অৱ . আর বেশির ভাগ টপ্পা ও ভৃংরি। সত্যবাবু, বদ্রি-মুকুল-নামক কৃষ্ণনগরের রাজার প্রথমে সেতারশিক্ষক ও পরে ব্যায়ামশিক্ষকের কাছে সেতার শিখতেন। । বদ্রি ছিল অতিচমৎকার সেতার-বাজিয়ে । ফলে সত্যবাবু বেশ ভাল সেতারী হয়ে উঠেছিলেন। বছরখানেক পর রবীন্দ্রনাথ দিন ৪il৫-এর জ্য আমাদের কৃষ্ণনগরের বাড়ীতে আসেন। সেখানেই তার গান আমি প্রথম শুনি । গলা ছিল তার আশ্চৰ্য্য ! অথচ তার গান একেবারে তানবৰ্জিঞ্জত । আমার হিন্দীগানে-অভ্যস্ত কানে তার গান যেন কেমন-কেমন। লাগল। তারপর কলকাতায় ফিরে আমি । রবীন্দ্রনাথ। বন্ধুহিসেবে আমাদের বাসায় প্রায় প্রত্যহই আসতেন এবং প্রায় প্রত্যহই প্লার স্বরচিত গান শুনতুম। তার ভাগিনেয় সত্যপ্রসাদ গাঙ্গুলীও সঙ্গে আসতেন। তিনি হারমোনিয়মে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গত করতেন। মধ্যেমধ্যে রবীন্দ্রনাথ ‘অভিজ্ঞ’-নামে তার এক ভাইঝিকে সঙ্গে নিয়ে। আসতেন । তার তুল্য গান গাইতে আমি আরকাউকে কথনো শুনিনি। যেমন তার গলা মিষ্টি, তেমনি তার গাইবার ধরণ ছিল অতি সরস। তার মুখের একটি হিন্দী গান, “ঠাঢ়ি রহে৷ মেরে ঐাখন আগে” ( ছায়ানট ) আজপর্যন্ত আযার কানে লেগে আছে। তার এমন অদ্ভুত ক্ষমতা ছিল যে, সে সমস্ত ‘বাল্মীকি-প্রতিভার। গান প্রথমথেকে শেষপর্যন্ত এক জায়গায় বসে একটানা গাইতে পারত—অভিনয় করে। এমন দরদী গলা লাখে একজনের হয়। মেয়েটি অল্পবয়সে যার যায়, তাই তাকে বেশি, লোকে জানতে পারেনি। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ তার গানের অতিশয় ভক্ত ছিলেন। এইসময়ে যদিও আমি সুর-সারের জগতেই থাকতুম, তবু পূবসংস্কারবশতঃ লালচাদের সঙ্গে একটি ওস্তাদের কাছে গান শিখতে যেভুম । তার কাছে একটিমাত্র ইমন-কল্যাণের খেয়াল শিখি। আমার ; রীতিমত সঙ্গীতশিক্ষা ঐপর্যস্ত। রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে আমার । পরিচয় হবার ৪৫ মাস পরে তার প্রাতৃসূত্রী এবং অভিজার বড়দিদি শ্রীমতী প্রতিভাদেবীর সঙ্গে দাদার বিবাহ হয়। তিনি ছিলেন একরকম হাফ-ওস্তাদ। এবং নিত্য গান অভ্যাস করতেন। আমার যতদূর মনে পড়ে, তিনি বেশিরভাগ গাইতেন হিন্দীগান । তিনি পিয়ানোর সঙ্গে গান গাওয়া অভ্যাস করেছিলেন, তাই তার গাবার ঢঙ ছিল একটু কাটা। কাট। মীড় তার গলায় ছিলনা। তিনি কখনো রবীন্দ্রনাথের গান গাইতেন বলে’ আমার মনে পড়েন। কিন্তু সঙ্গীতশিক্ষায় @ার অধ্যবসায় ছিল অসাধারণ। তিনি পিয়ানোয় বাজাতেন ওস্তাদী বিলিতীবাজনা । বেঠোভেনের Funeral March -