পাতা:গুচ্ছ - কাঞ্চনমালা বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

গুচ্ছ।

মণিলাল বড় হইয়া উঠিয়াছে, সে এখন কলিকাতার কলেজে পড়ে। আধুনিক যুবা-জনোচিত সভ্যতার আদব কায়াগুলি মণিলালের বেশ অভ্যস্ত হইয়াছে, তাহার পাড়াগেঁয়ে ভাবটি কাটিয়া গিয়াছে। পুত্র সৌখীন হইয়াছে দেখিয়া মণিলালের মাতা বিবাহ দিবার জন্য ব্যস্ত হইয়াছেন, কিন্তু মণিলাল বিবাহ করিতে চায় না। সে কলিকাতা হইতে দৌলতপুরে বড় একটা আদিতে চায় না, কলেজে ছুটী হইলে হয় অন্য স্থানে বেড়াইতে যায়, না হয় কলিকাতাতেই থাকে। বৎসরের মধ্যে দুই একবার যখন বাড়ী আসে, তখন মণিলাল সর্ব্বাগ্রে সুরমাদের বাড়ী ছুটিয়া যায়।

 মণিলাল বিবাহ করিতে চায় না, কথাটা গ্রামে রাষ্ট্র হইতে বাকি রহিল না। কুৎসা যাঁহাদিগের উপজীবিকা তাঁহাদিগের একটা নুতন খোরাক জুটিল, কেহ বলিলেন সুরমা স্বয়ম্বর হইয়াছে, কেহ বলিল মণিলাল গান্ধর্ব্ব বিবাহ করিয়াছে, কোন কোন দূরদর্শী রাজনৈতিক ইহাতে রোমিও-জুলিয়েটের কাহিনীর পূর্ব্বাভাষ দেখিতে পাইলেন। যাহাদিগকে লইয়া এত কথা চলিতেছে ক্রমশ: একথা তাহাদিগের কর্ণেও পৌঁছিল, সুরমা লজ্জায় মরিয়া গেল, মণিলাল দৌলতপুরে আসা পরিত্যাগ করিল।

 মণিলালের মাতা ভাবিলেন, যে ছেলে হয়ত সুরমার জন্যই বিবাহ করিতে চায় না, এবং স্থির করিলেন যে সুরমার সহিত সম্বন্ধ হইলেই মণিলালের বিবাহে আপত্তি থাকবে না। স্বামীকে রাজি করিতে তাঁহার বড় বিশেষ বেগ পাইতে হইল না, কারণ মণিলালের জন্য সদাশিবও চিন্তিত হইয়া পড়িয়াছিলেন। যথাসময়ে সদাশিব মিত্রের প্রস্তাব প্রবোধ

১২০