পাতা:গুচ্ছ - কাঞ্চনমালা বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



বশীকরণ



 বিবাহ না করিয়াও পুলিন যখন জগতে বিবাহিত জীবনের অসারতা বুঝিতে পারিল, তখন মানব-জগতে এই নূতন সত্য প্রচার করিবার জন্য সে একটি সভা স্থাপন করিল। বিশ্বনিন্দুকগণ সেই সভার নাম রাখিয়াছিল “চিরকুমার সভা”।

 পুলিন স্বয়ং এই সভার সম্পাদক, তাহার সহপাঠগণের দলে যাহারা অবিবাহিত ছিল, তাহারা সকলেই এই সভার সদস্য। ক্ষীণক্লায়, দুরারোগ্য উদরাময়রোগগ্রস্ত, অধ্যাপক শ্রীযুক্ত সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত এই সভার সভাপতির আসন অলস্কৃত করিয়াছিলেন, অবশ্য তিনিও, অবিবাহিত। বিবাহিত অধ্যাপকের দল ও পুলিনের সহপাঠগণের মধ্যে যাঁহারা ইহারই মধ্যে বিবাহরূপ কলঙ্ক কালিমা মাখিয়াছিলেন, তাঁহারা অবশ্য এ সভায় স্থান পাইতেন না। প্রতি শনিবারে কলেজের ছুটির পরে সভার অধিবেশন হইত। অধিবেশনে বিবাহিত জীবনের অসারতা সম্বন্ধে বক্তৃতা করিয়া পুলিন ও প্রবোধ সর্ব্বাপেক্ষ অধিক প্রতিপত্তি লাভ করিয়াছিল। তাহারা যখন বিবাহ-প্রথাকে দেশের সকল দুঃখের কারণ বলিয়া দোষ দিয়া সভা গৃহ কাঁপাইয়া তুলিত, তখন বাহিরে দাঁড়াইয়া প্রবেশ লাভে বঞ্চিত বিবাহিত যুবকবৃন্দও কাঁপিয়া উঠিত।

 এক বৎসর কাল সভাটি বেশ চলিল; বিবাহযোগ্য কন্যাভারগ্রস্ত

১৫৩