পাতা:গুচ্ছ - কাঞ্চনমালা বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

পাগলের কথা।

বালুকারাশির উপরে লাল চেলী পরিয়া একটি বালিকা শয়ন করিয়া আছে। ভাবিলাম অগ্নিবৎ তপ্ত বালুকা কি তাহার দেহ দগ্ধ করিতেছে না? তাহার নিকটে সরিয়া গেলাম, দেখিলাম সে যেন কাহার নবপরিণীতা বধূ। বহুমূল্য মণিমুক্তাগুলি সুবর্ণের আসনে বসিয়া তাহার দেহের চারিদিক হইতে হাসিয়া উঠিল, আমাকে ব্যঙ্গ করিতে লাগিল, কিসের জন্য তাহা আমি বুঝিতে পারিলাম না। মৃণাল-কোমল বাহুমূলে মস্তক রক্ষা করিয়া বালিকা ঘুমাইতেছিল, আমি তাহার দেহ স্পর্শ করিয়া ডাকিলাম, স্পর্শে বুঝিলাম সে ঘুম ভাঙ্গিবার নহে। আবার পূর্ব স্মৃতি ফিরিয়া আসিল, কীর্ত্তিনাশার শত শত তরঙ্গ তাহার সীমন্ত হইতে সিন্দূর-লেখা দূর করিতে পারে নাই, কপালের স্থানে স্থানে তখনও চন্দন-রেখা স্পষ্ট রহিয়াছে, সে যে আমার নব-বিবাহিতা, কাল সন্ধ্যাকালে তাহার বৃদ্ধ পিতা যে তাহাকে আমার হাতে সঁপিয়া দিয়াছিলেন। ভাবিলাম বুড়া নিশ্চিন্ত হইয়া বসিয়া আছে, আর মনে। করিতেছে তাহার কন্যা নির্ব্বিঘ্নে শ্বশুরগুহে পৌঁছিয়াছে। তাহার বহুমূল্য অলঙ্কাররাশি দেখিয়া লোকে হয়ত আশ্চর্য্য হইতেছে। এই কথা ভাবিয়া হাসি পাইল। হঠাৎ দেখিতে দেখিতে চেলীখানা যেন ঘোর লাল হইয়া উঠিল, পদ্মার জল লাল হইয়া উঠিল, শুভ্র বালুক-সৈকত লাল হইয়া গেল, আকাশ লাল হইয়া উঠিল, জ্ঞানহীন হইয়া আবার ছুটিলাম। অনেকক্ষণ পরে মনে হইল কোথা হইতে শীতল বাতাস আসিয়া আমার কপাল স্পর্শ করিতেছে, আমি ধীরে ধীরে নদীতীরে চলিয়া বেড়াইতেছি, তখন সূর্য্য অস্তমিত হইয়াছে। পশ্চাতে কাহার পদশব্দ শুনিলাম, উদভ্রান্ত হইয়া ডাকিলাম