পাতা:গুচ্ছ - কাঞ্চনমালা বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

গুচ্ছ।

পরে ধরাদিল। পুলিন নীরবে সমস্ত সহ্য করিয়া গেল। বিবাহের দিনে চিরকুমার সভার অধঃপতনের কারণ গুলি মূর্ত্তিমতী হইয়া বরের গৃহে দেখা দিলেন। সভার বাঁধা গৎগুলি প্রবোধের স্ত্রীর আগাগোড়া মুখস্থ ছিল, তিনি মহিলা সভায় তাহা আওড়াইয়া বিবাহ-বাড়ী কোমলকলহাস্যে মুখরিত করিয়া তুলিলেন। পুলিন তখন মনে মনে ভাবিতেছিল যে ক্ষুদ্রচেতা নরনারীগুলি জগতের যে কি সর্ব্বনাশ করিতেছে, তাহারা তাহা বুঝিতেছেনা। এইরূপে মহাপুরুষের কৌমারব্রত ভঙ্গ হইল।

 বিবাহের পরে দুইবৎসর কাটিয়াগেল, পুলিনের পিতা পুত্রের বিবাহ দিয়া অধিকতর বিপদে পড়িলেন। বিরাহের পরে যখন বধূ ঘরে আসিল, তখন পুত্র আর ঘরে আসিতে চাহিলন। বৃদ্ধ পুত্রবধূ লইয়া ব্যতিব্যস্ত হইয় পড়িলেন। পুলিনের স্ত্রীর নাম বিভা, সে সুন্দরী, সুশিক্ষিতা ও গুণশালিনী। বিবাহের সময় তাহার বয়স হইয়াছিল, সে নিতান্ত বালিকা ছিলনা, সে পতির অনাদরের কারণ বুঝিতনা বটে কিন্তু আদরের অভাব বুঝিত। বুধিয়া সে সর্ব্বদা ম্রিয়মাণ হইয়া থাকিত, তাহার সেই করুণ ভাবটি শ্বশুর শ্বশ্রূর বুকে সর্ব্বদা শেলের মত বিধিয়া থাকিত। বৃদ্ধ বৃদ্ধা উপায় না দেখিয়া ভগবানকে স্মরণ করিতেন, তাই অগতির গতি প্রসন্ন হইয়া পথভ্রান্তের পথনির্দ্দেশ করিয়া দিলেন।

 শোভা সম্পর্কে বিভার বড় বোন, বিভার বিবাহের পাঁচ ছয় বৎসর পূর্ব্বে তাহার বিবাহ হইয়াছিল। শোভা বড়ই রহস্যপ্রিয়া, বাড়ীতে তাহার সহিত কেহ আঁটিয়া উঠিতে পারিতনা। বিভার বিবাহের দুই বৎসর পূর্ব্বে শোভা স্বামীর সহিত বিদেশে চলিয়া গিয়াছিল, এবং বিভার বিবাহের সময় আসিতে পারে নাই বলিয়া কত দুঃখ করিয়া চিঠি

১৫৮