পাতা:গুচ্ছ - কাঞ্চনমালা বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

গুচ্ছ।

মিশিত না আপনার পড়া-শুনা ও কলেজের কাজ লইয়াই ব্যস্ত থাকিত। সুতরাং একদিন সকালে তাহার ভৃত্য যখন আসিয়া সংবাদ দিল যে একটি ভদ্রলোক তাহার সহিত সাক্ষাৎ করিতে আসিয়াছেন, তখন সে বড়ই আশ্চর্য্য হইয়া গেল। সে বাহিরে আসিয়া দেখিল যে নীলবর্ণের চশমা-ধারী একটি ভদ্রলোক তাহার জন্য অপেক্ষা করিতেছেন। পুলিনকে দেখিয়াই তিনি বলিয়া উঠিলেন “এই যে, আপনারই নাম পুলিন বাবু? আমার নাম শ্রীনিশীথনাথ ঘোষাল। মহাশয়ের সহিত আমার সম্পর্ক বড়ই নিকট। আমার স্বামিনী মহামহিমান্বিত শ্রীল শ্রীযুক্তা শোভনা-দেবীর খাস-সখী, এবং খুল্লতাতপুত্রী শ্রীযুক্তা বিভাদেবীর সহিত আপনার বিবাহ হইয়াছে। শ্রীমতীর আদেশে আমি আপনার সহিত সাক্ষাৎ করিতে আসিয়াছি। আমরা সম্প্রতি পাটনায় আসিয়াছি, উদ্দেশ্য স্বাস্থ্য সংস্কার। মহাশয়ের সহিত সাক্ষাৎ করিবার ইচ্ছাটা বড়ই বলবতী ছিল।” এই কথা কয়টি গুনিয়া পুলিন হাড়ে চটিয়া গেল। লোকটির কথাবার্ত্তা হাবভাব সমস্তই যেন বিদ্ধপব্যঞ্জক কিন্তু কথাগুলি অত্যন্ত গম্ভীর ভাবে অথচ হাসি-মুখে বলা। সে ভাবিয়া কিছু ঠিক করিতে না পারিয়া বলিয়া ফেলিল “বসুন, চা খাবেন কি?” ভদ্রলোকটি এক গাল হাসিয়া উত্তর করিলেন “চা না খাওয়াইয়া শ্রীমতী কি আমাকে এতদূর আসিতে দিয়াছেন? আমার যে কাহিল শরীর?” কথা শুনিয়া পুলিন হাসিয়া ফেলিল। কারণ আগস্তুকের ঈষৎ স্থূল দেহে দুর্ব্বলতার চিহ্ন মাত্র দেখা যাইতেছিলনা। তিনি বোধ হয় পুলিনের মনের ভাব বুঝিতে পারিয়াছিলেন কারণ তিনি বলিয়া উঠিলেন “আমার শরীর দেখিয়া ভাবিবেন না যে আমি বড় বলবান্‌, তিল তিল

১৬০