পাতা:গুচ্ছ - কাঞ্চনমালা বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

গুচ্ছ।

করুন; এই দুর্ব্বল অবস্থায় পারিবারিক শান্তিভঙ্গের কল্পনা করিলেও আমার মাথা ঘুরিতে থাকে।

 পুলিন নিরুপায় হইয়া বলিল “আচ্ছা যাব।”

 সন্ধ্যার সময়ে পুলিন নিশীথ বাবুর বাসায় উপস্থিত হইল। সে দেখিল বাঙ্গালাটি সুন্দর সাজান, দু একদিনের জন্য বেড়াইতে আসিয়া লোকে যে এমন ভাবে থাকিতে পারে তাহা পুলিনের কল্পনাতীত। তাহাকে দেখিয়া একজন বেহারা বাড়ীর ভিতরে খবর দিতে গেল। অবিলম্বে নিশীথ বাবু তাহাকে অভ্যর্থনা করিতে আসিলেন। তিনি বলিলেন “আসুন আসুন, আপনাকে দেখে আমার দেহে প্রাণ ফিরে এল। আর একটু বিলম্ব হইলেই গরীবের চাকরীটি যেত আর কি?

 পুলিন। থাক, আমি বাহিরেই বসি।

 নিশীথ। মহাশয়, তা'হলে আমার কাঁচা মাথাটী এখুনি উড়ে যাবে।

 পুলিন অগত্য উঠিল, উঠিবার সময়ে মনে মনে ভাবিল নিশীথ বাবু বড়ই স্ত্রৈণ, এমন স্ত্রৈণ লোকত সচরাচর দেখা যায় না। সে বাড়ীর ভিতরে গিয়া দেখিল যে অন্দরটিও পরিপাটিরূপে সাজান। সেই সময়ে বলয়কঙ্কণগুঞ্জনে কক্ষটি মাতাইয়া তুলিয়া নিশীথ বাবুর শ্রীমতী প্রবেশ করিলেন। তিনি পুলিনকে দেখিয়া হাসিয়া বলিলেন “লজ্জা কি? ভিতরে এসে বস।” পুলিন কিংকর্ত্তব্যবিমূঢ় হইয়া দাঁড়াইয়া রহিল। তাহা দেখিয়া শোভা তাহার হাত ধরিয়া একখানি চেয়ারে বসাইল, পুলিন কলের পুতুলটির মত বসিল। নিশীথ বাবু তাহার অবস্থা দেখিয়া হাসি চাপিয়া রাথিতে না পারিয়া মুখের ভিতরে কাপড় এবং রুমাল গুঁজিতেছিলেন। আহার শেষ করিয়া পুলিন যখন রাত্রিতে গৃহে ফিরিল

১৬২