পাতা:গুচ্ছ - কাঞ্চনমালা বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

বশীকরণ।

তখন তাহার অজ্ঞাতসারে তালিকার প্রতি অস্ফুট প্রীতির ভাব আসিয়া তাহার হৃদয় অধিকার করিতেছিল, আর তাহার সঙ্গে সঙ্গে নিশীথ বাবুর প্রতি ঘৃণা ও অবজ্ঞার ভাবটিও কমিয়া আসিতেছিল।

8

 শোভা দেবীর তূণে বশীকরণের যে কয়টি অমোঘ অব্যর্থ অস্ত্র ছিল, তাহার মধ্যে তাঁহার রন্ধন বিদ্যাটি অন্যতম। নিশীথ বাবুরা পাটনায় আসিবার পর পুলিনের প্রায় প্রত্যহই তাঁহাদের বাটিতে নিমন্ত্রণ হইত। পুলিন নিমকহারাম নহে। সে সর্ব্বত্র শোভার রন্ধনের প্রশংসা করিয়া বেড়াইত। এইরূপে শোভা ও নিশীথ বাবুর সহিত পুলিনের ঘনিষ্ঠত বাড়িয়া গেল। কিছুদিন পরে শোভা যখন প্রস্তাব করিল যে, পুলিন বাসা উঠাইয়া দিয়া তাহাদিগের সহিত আসিয়া থাকুক, তখন কৃতজ্ঞ লবণভোজী পুলিন, নিশীথ বাবুর শ্রীমতীর আদেশ, অগ্রাহ্য করিতে পারিল না। পাটনার পাচকের হাত হইতে পরিত্রাণ পাইয়া পুলিন বাঁচিয়া গেল, অল্প দিনের মধ্যে তাহার শ্রী ফিরিয়া গেল, রুক্ষ স্বভাব অনেকটা কোমল হইয়া আসিল।

 একদিন প্রভাতে শোভা পুলিনকে বলল “ওগে গাঙ্গুলী মশাই, নূতন খবরটা গুনেছ? দেশ থেকে আমার খুড়িমা আর আমার একটি বোন হাওয়া খেতে পাটনায় আসছে। বাড়ীটা এতদিন খালি খালি ঠেকতো; এইবারে গুল্‌জার হবে।” পুলিন অপ্রস্তুত হইয়া বলিয়া উঠিল “এইবারে তা হলে আমি একটা বাসা ঠিক করে নিই? আমি থাকলে তাঁদের অসুবিধা হবে।” শোভা হাসিয়া তহিকে উদ্ধাংশ দিল!

১৬৩