পাতা:গুচ্ছ - কাঞ্চনমালা বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

গুচ্ছ।

 পুলিন। যাইতেই যখন হইবে তখন আর উপায় কি?

 ঘোষাল। সুন্দর মুখেই সর্ব্বত্রই জয়।

 শোভা তাহাকে পুনরায় একটি কিল্‌ দেখাইল। স্থির হইয়াগেল যে ছুটী না পাইলেও পুলিনকে ছুটী লইতে হইবে। যথাসময়ে যাত্রা করিয়া সকলেই দেশে আসিলেন, যাত্রার পূর্ব্বে পুলিন দেখিল যে কে তাহার কাপড়চোপড়গুলি ট্রঙ্কে ও ব্যাগে গুছাইয়া রাখিয়াছে, দেখিয়াই সে বড় আশ্চর্য্যান্বিত হইয়া গেল।

 শ্বশুরালয়ে আসিয়া প্রতিজ্ঞা-ভঙ্গের ভয়ে পুলিন ছট্‌ ফট্‌ করিয়া বেড়াইতে লাগিল। সে প্রথমদিন জেদ ধরিল যে সে অন্দরমহলে শয়ন করিবেন, কিন্তু শোভার হাত এড়াইতে পারিল না। অপরাহ্লে অন্দরমহলে একখানি পুরাতন ফটোগ্রাফ দেখিয়া তাহার মন বড় খারাপ হইয়া গেল। ফটোগ্রাফখানি তাহার ও বিভার, বিবাহের সময় তোলা। বিভাকে তাহার কিছুমাত্র মনে ছিল না, কিন্তু সে ছবির সহিত প্রভার সাদৃশ্য দেখিয়া তাহার মন খারাপ হইয়া গেল। সে শুনিয়াছিল যে বিভার বিবাহ হয় নাই, কিন্তু পাটনায় প্রভার মাথায় দুই একদিন সিঁদুরের দাগ দেখিয়াছিল। জিজ্ঞাসা করায় ঘোষাল মহাশয় বলিয়াছিলেন যে তাহাদের দেশে আইবুড় মেয়ের অল্প সিঁদুর পরিয়া থাকে, বিবাহ হইলে চওড়া করিয়া সিঁদূর পরে। মনে মনে এইসব কথা তোলাপাড়া করিয়া পুলিনের বড় সন্দেহ হইল, সে ভাবিল যে হয়ত তাহার ব্রতভঙ্গ করিবার জন্য একটা চক্রান্ত হইয়াছে। সেই জন্যই শোভা তাহাকে ভুলাইয়া পাটনা হইতে লইয়া আসিয়াছে। তাহার মনে কেমন সন্দেহ হইল, সে বলিয়া পাঠাইল যে, তাহার শরীর ভাল নহে, সে কালই পাটনায় ফিরিবে।

১৭০