পাতা:গুচ্ছ - কাঞ্চনমালা বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

নিয়তি।

পাইল না। ব্যাকুল হইয়া প্রাণমোহন স্বয়ং গ্রামের চতুর্দ্দিকে অনুসন্ধান করিয়া বেড়াইতে লাগিলেন,আকস্মিক বিপদ্‌ আশা করিয়া প্রমোদাসুন্দরী শোকশয্যা ত্যাগ করিলেন ও কন্যার সন্ধান করিতে ব্যস্ত হইলেন, কান্তি বরবেশ ত্যাগ করিয়া মাধুরীর সন্ধানে নির্গত হইল।

 ক্রমে বিপদ্‌ বুঝিয়া নিমন্ত্রিত ব্যক্তিগণ, সরিয়া পড়িল, আলোকমালা নিবিয়া গেল,গ্রামের লোকে বাদ্যধ্বনির পরিবর্ত্তে শোকাতুরা মাতার ক্রদনধ্বনি শুনিতে পাইল। রজনী শেষ হইবার কিঞ্চিৎ পূর্ব্বে প্রাণমোহন হতাশ হইয়া গৃহে ফিরিলেন, কিন্তু কান্তি আর চৌধুরীদিগের গৃহে ফিরিল না।

 শেষ রাত্রিতে জেলিয়ারা খালে মাছ ধরিতে গিয়া একটা গুরুভার পদার্থ টনিয়া তুলিল। জাল উঠাইয়া সভায় দেখিল যে উহা একটি রমণীর মৃতদেহ। তাহারা যখন ঘাটে নৌকা লাগাইল তখন দেখিল কে যেন তাহদের প্রতীক্ষায় বসিয়া আছে। ক্রমে ঘাটে লোক জমিয়া গেল, কোথা হইতে কান্তি আসিয়া যখন মৃতাকে মাধুরী বলিয়া ডাকিল তখন লোকে জানিল প্রাণমোহন চৌধুরীর কন্যা মরিয়াছে। সকলে হায় হায় করিতে লাগিল। তখন সেই বাটে নিরুদ্বেগে বলিয়াছিল একজন কৃষ্ণবর্ণ খর্ব্বকায় বৃদ্ধ ব্রাহ্মণ। সে যেন মাধুরীর মৃতদেহেরই অপেক্ষা করিতেছিল।

 ক্রমে প্রাণমোহন সংবাদ পাইলেন। তাঁহার মুখে শোকের কোন চিহ্ন দেখা গেল না, মুখ যেন আরও গম্ভীর হইয়া উঠিল। প্রমোদাসুন্দরীর রোদনধ্বনি গগন বিদীর্ণ করিতে লাগিল। সেই সময়ে কোথা হইতে তীরবেগে একখানা পান্‌সি আসিয়া ঘাটে লাগিল। একজন বৃদ্ধ

২১