পাতা:গুচ্ছ - কাঞ্চনমালা বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

গুচ্ছ।

লাগিলাম, কিন্তু কোথায়ও উপযুক্ত স্থান পাইলাম না। প্রকাণ্ড প্রকাণ্ড খিলানের ভিতর দিয়া শন্‌ শন্‌ করিয়া তুষার-শীতল বায়ু ছুটয়া আসিয়া হাড় কাঁপাইয়া দিতেছিল, বৃষ্টির জল আসিয়া ঘরের মেঝে ভরিয়া গিয়াছিল। কোনস্থানেই আশ্রয় পাইলাম না। চারি পাঁচটি ঘর ঘুরিয়া ক্লান্ত হইয়া পড়িলাম। এক্কাওয়ালা তখন শীতে থর থর করিয়া কাঁপিতেছিল, ভাবলাম বারান্দায় ফিরিয়া যাই। ফিরিবার চেষ্টা করিয়া দেখিলাম অন্ধকারে পথ হারাইয়াছি। অনেকক্ষণ ঘুরিয়া ঘুরিয়া আর একটি বারান্দায় আসিয়া উপস্থিত হইলাম এবং ক্লান্ত হইয়া তাহার একটা থামের আড়ালে বসিয়া পড়িলাম। একাওয়ালা আমার অবস্থা বুঝিয়া হায় হায় করিতে লাগিল। বসিয়া রসিয়া চারিদিক লক্ষ্য করিয়া দেখিতে লাগিলাম। মাঝে মাঝে বিদ্যুত হানিতেছিল। দেখিলাম যেখানে বসিয়া আছি তাহা অট্টালিকার প্রাঙ্গণের বারান্দ, প্রাঙ্গণটি চতুষ্কোণ এবং তাহার চারিদিকে দ্বিতল গৃহ। ভাবিলাম অট্টালিকাটি যখন দ্বিতল, তখন ইহার কোন না কোন অংশে সিঁড়ি আছে এবং তাহা দিয়া যদি উপরে উঠতে পারি তাহা হইলে আশ্রয় পাইলেও পাইতে পারি।

 অল্পক্ষণ খুঁজিতেই সিঁড়ি বাহির হইল, দেখিলাম বারান্দার চারিকোণে চারিটি পাথরের সিড়ি আছে। সিঁড়ি দিয়া উপরে উঠিয়া দেখিলাম চারিদিকে চারিটি বারান্দা, বারান্দার পাশে প্রকাণ্ড প্রকাও ঘর, কিন্তু কোনটিতেই দরজা জানালা বা কপাট নাই। এঘর ওঘর খুঁজিতে খুঁজিতে আর এক মহলে গিয়া উপস্থিত হইলাম। দ্বিতীয় প্রাঙ্গণটি প্রথমটি অপেক্ষা বৃহৎ, তাহারও চারিদিকে বারান্দা এবং চারিপাশে

২৮