পাতা:গুচ্ছ - কাঞ্চনমালা বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

গুচ্ছ।

“আজ মধুরে মিশাবি মধু
পরাণ বঁধু!
চাঁদের আলোয় ঐ বিরাজে
মান করে থাকা আজ কি সাজে”—

 ইন্দুর শিরায় শিরায় বিদ্যুৎ চুটিয়া গেল। যেদিক হইতে সঙ্গীত ধ্বনি শোনা যাইতেছিল সেইদিকে মুখ ফিরাইয়া চাহিয়া রহিল; দেখিল সত্য সত্যই কে আসিতেছে। আবার গান—

“বনে এমন ফুল ফুটেছে,
মান করে থাকা আজ কি সাজে?
মান অভিমান ভাসিয়ে দিয়ে,
চল কুঞ্জ-মাঝে।”—

 বিস্ময় বিস্ফারিত নেত্রে ইন্দু চাহিয়া দেখিল, যে গাহিতেছে তাহার হাতে বাঁশী নাই, চরণে নূপুর নাই, অঙ্গে পীতবাস নাই, চুড়ায় শিখিপাখা নাই। তখন তাহার মনে বড় অভিমান হইল; যদি দেখা দিতে আসিলে, তবে ছদ্মবেশ কেন? যে গাহিতেছিল তাহার সন্ন্যাসীর বেশ, কুঞ্চিত কেশরাশি উড়িয়া বেড়াইতেছিল; পরিধানে গৈরিক বদন, চরণদ্বয় নগ্ন। সে যখন নিকটে আসিল, তখন ইন্দু অভিমান ভুলিয়া গেল, সঙ্গীতের মোহিনী শক্তি তাহাকে আচ্ছন্ন করিয়া ফেলিল। সে আত্ম-বিস্মৃতা হইয়া উঠিয় দাঁড়াইল। গায়ক মন্দিরের নিকটে আসিয়া ইন্দুকে দেখিল, দেখিয়া স্তম্ভিত হইয়া দাড়াইল। ইন্দু অগ্রসর হইয়া জিজ্ঞাসা করিল “তুমি আজ এবেশে কেন?” গায়ক অত্যন্ত আশ্চর্য্য হইয়া বলিল “কি বেশে? আমিত নিত্যই এই বেশে আসি।”

৬৪