পাতা:গুচ্ছ - কাঞ্চনমালা বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

পরিবর্ত্তন।

দেখিলেন সংসার ত’ তাঁহার নহে, তিনি স্বামী-পুত্রহীন, স্বামীর মৃত্যুর সহিত সংসারের সকল সম্পর্ক ঘুচিয়া গিয়াছে। পুত্র ও পুত্রবধূগণ তাঁহার নহে, তাঁহার যে আপনার, সে অন্যস্থানে সংসার পাতিয়া বসিয়াছে, তখন তিনি ইহকাল ছাড়িয়া পরকালের কার্য্যে মনোনিবেশ করিলেন। বিধবা বড় বধূকে আগ্‌লাইয়া রাখা ও দেবসেবা করা, তাঁহার জীবনের প্রধান অবলম্বন হইয়া উঠিল। সেজ-বৌ দেখিল যে শাশুড়ী থাকিতে, বড়-বধূ, মেজ-বধূ থাকিতে, তাহার সংসারে কর্ত্রী হইয়া বসা ভাল দেখায় না, তখন সে বড় বধূকে ভাঙ্গাইয়া লইবার জন্য বিশেষরূপে চেষ্টা করিতে লাগিল।

 একাদশীর দিন প্রাতঃকালে বড়-বধূর মুখে তাম্বুলরাগ দেখিয়া হরবল্লভের পত্নী অত্যন্ত বিস্মিতা হইলেন এবং যৎপরোনাস্তি ভৎসনা করিলেন। বড়-বৌ তখন সেজ-বৌর নিকট বিশেষ ভরসা পাইয়াছে, শাশুড়ীর মুখের উপর কোন কথা বলিল না বটে, কিন্তু সেজ-বৌর ঘরে যাইয়া কাঁদিয়া ভাসাইয়া দিল। সেজ-বৌও কোন কথা বলিল না বটে, কিন্তু তাহার পর মধ্যাহ্নে রণচণ্ডীরূপে বামা ঠাকুরঝির আবির্ভাব হল।

 “তুই ভেবেছিস্‌ কি যে এর ফল তোকে ভুগ্‌তে হবে না, ঘোর কলি হ’লেও এখনও ধর্ম্ম আছেন, এখনও চন্দর সূর্য্যি উঠছে, এই দুধের মেয়েকে একাদশী করান—তোর কি ভাল হবে ভেবেছিস্—তুই কি ভালোর মাথা খাবিনি!’ যাতনা-ক্লিষ্টা বিধবা আর সহ্য করিতে না পারিয়া কাঁপিতে কাঁপিতে বসিয়া পড়িলেন। এমন সময়ে মেজ-বৌ পূজার ঘর হইতে বাহির হইয়া জিজ্ঞাসা করিল, “হ্যাঁগা বামা পিসি, তুমি এত কোরে কাকে বল্‌চো গা?” মেজ-বৌকে দেখিয়াই বামাপিসি