পাতা:গুচ্ছ - কাঞ্চনমালা বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

গুচ্ছ।

আমার যে আর কেউ নেই মা!” শ্বশ্রু বন্ধ্যা পুত্রবধূকে সান্ত্বনা করিতে লাগিলেন।

 শেফালিকা ধীরে ধীরে উঠিয়া সেজ-বৌ এর ঘরে গেল, তাহাকে দেখিয়া কেহ কথা কহিল না, তাহার ইসারায় তাহার ননদ উঠিয়া আসিল। পথে ননন্দা ও ভ্রাতৃবধূতে যে কথোপকথন হইল, তাহা শুনিয়া ননন্দার কর্ণমূল পর্য্যন্ত আরক্ত হইয়া গেল। তখন উভয়ে উপরে যাইয়া হরবল্লভের পত্নীর কক্ষে প্রবেশ করিলেন, শেফালিকা ও তাহার ননদের নির্ব্বন্ধতিশয়ে হরবল্লভের পত্নী তখনই বন্দীপুর ত্যাগ করিয়া যাইতে প্রস্তুত হইলেন। ছোট-বৌ ঠাকুর ঘরের কাজ সারিয়া শাশুড়ীর নিকট আসিয়া বসিল। পরেশচন্দ্র ও যোগেশচন্দ্র আহার করিতে আসিয়া বিস্মিত হইয়া দেখিলেন যে, আহারের সময়ে মাতা তাঁহাদিগের নিকটে আসিয়া দাঁড়াইলেন না, দুই ভাই নীরবে আহার করিয়া বাহিরে চলিয়া গেলেন। দ্বিপ্রহরের পর নরেশচন্দ্র আসিয়া শয়নকক্ষে প্রবেশ করিলেন, আহারান্তে পুনরায় বাহিরে চলিয়া গেলেন, কি হইয়াছে তাহা কেহই জানিল না। হরবল্লভের পত্নী যখন চলিয়া যাইবার উপক্রম করিতেছেন তখন মেজ-বৌ ও ছোট-বউ কাঁদিয়া কহিল “মা তুমি যদি যাবে ত দ্বাদশীর দিন নিরম্বু উপবাস করিয়া যেও না, আমাদিগের অকল্যাণ কোরো না।” হরবল্লভের পত্নী কি ভাবিয়া আহার করিতে সম্মতা হইলেন। তৃতীয় প্রহরে সকলের আহার সমাপ্ত হইল।

 শেফালিকার সহিত মা চলিয়া যাইতেছেন, মেজ-বৌ এই সংবাদ স্বামী ও দেবরগণের নিকট পাঠাইয়া দিল। সংবাদ আসিল, মেজ-বাবু ভিন্নগ্রামে যাত্রা শুনিতে গিয়াছেন, ছোট-বাবু মাছ ধরিতে গিয়াছেন, সেজ-

৭৮