পাতা:গুপ্ত রহস্য - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গুপ্ত-রহস্য

তাহাদিগের কথা শুনিয়া আমি ভাবিলাম, অপরের হস্তে অপঘাত মৃত্যু অপেক্ষা আমার যথা সর্ব্বস্ব অপহৃত হওয়াই মঙ্গল। এই ভাবিয়া আমার চাবিগুচ্ছ যাহা আমি আমার বিছানার নিম্নে লুকাইয়া রাখিয়াছিলাম, তাহা বাহির করিয়া উহার হস্তে প্রদান করিলাম। সেই ব্যক্তি উহা দ্বারা তৃতীয় ব্যক্তির সাহায্যে আমার ঘরস্থিত বাক্স প্যাঁটরা প্রভৃতি খুলিতে আরম্ভ করিল। যে ব্যক্তি ছুরিকা হস্তে আমার নিকট দণ্ডায়মান ছিল, সে আমার অঙ্গস্থিত অলঙ্কারগুলি খুলিয়া দিতে কহিল। আমি নিতান্ত ভীতিবিহ্বল চিত্তে এক একখানি করিয়া আমার পরিহিত অলঙ্কারগুলি খুলিয়া তাহার হন্তে অর্পন করিলাম। যাহারা বাক্স প্যাঁটরা প্রভৃতি খুলিতেছিল তাহারা একটা বাক্সের মধ্য হইতে আমার লোহার সিন্দুকের চাবি বাহির করিল; ও ঐ চাবি দ্বারা ঐ লোহার সিন্দুক খুলিয়া তাহার ভিতর সোনা রূপার অলঙ্কার ও নগদ অর্থাদি যাহা কিছু ছিল তাহা সমস্তই বাহির করিয়া লইল। এইরূপে যাহা কিছু মূল্যবান দ্রব্য আমার ঘরে ছিল তাহার সমস্তই উহারা আত্মসাৎ করিয়া পরিশেষে দুই বাক্তি আমার ঘরের দরওয়াজা খুলিয়া ও আমাকে তাহাদিগের সঙ্গে লইয়া সেই ঘর হইতে বহির্গত হইল। আমরা ঘরের বাহিরে আসিলে তৃতীয় ব্যক্তি যে ঘরের তিতর ছিল সে পুনরায় ঐ ঘরের দরওয়াজা ভিতর হইতে বন্ধ করিয়া দিয়া সিঁদের মধ্য দিয়া ঘরের বাহিরে আসিল, ও পরিশেষে তিন জন একত্রিত হইয়া অপহৃত দ্রব্য সকল ও আমাকে লইয়া সেই স্থান হইতে প্রস্থান করিল। সেই সময়ে আমি উহাদিগের ভয় প্রদর্শনে এপ ভীত হইয়া পড়িয়াছিলাম যে আমার মুখ দিয়া একটা মাত্র কথাও বহির্গত হইল না।