পাতা:গৃহদাহ - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উনবিংশ পরিচ্ছেদ যে শয্যা সপশ করিতেও আজ অচলার ঘণা বোধ হওয়া উচিত ছিল, তাহাই যখন সে যথা নিয়মে প্রস্তুত করিতে অপরাহুবেলায় ঘরে প্রবেশ করিল, তখন সমস্ত মনটা যে তাহার কোথায় এবং কি অবস্থায় ছিল--মানব-চিত্ত সম্পবন্ধে ঘাঁহার কিছমাত্র অভিজ্ঞতা আছে তাঁহারই অগোচর রহিবে না । সন্ত্র-চালিতের মত অভ্যন্ত কম সমাপন করিয়া ফিরিবার মাখে পাশের ছোিট টেবিলটির প্রতি অকস্মাৎ তার চোখ পড়িয়া গেল ; এবং ব্লটিং প্যাডখানির উপর প্রসারিত একখানা ছোট চিঠি সে চক্ষের নিমেযে পড়িয়া ফেলিল । মাত্র একটি ছাত্র । বার, তারিখ নাই, মণাল লিখিয়াছে--সেজদামশাই গো, করছি কি ? পরশ থেকে তোমার পথ চেয়ে চেয়ে তোমার মণিালের দটি চোখ ক্ষয়ে গেল যে । বহনক্ষণ অবধি অচলার চোখের পাতা নড়িল না। ঠিক পাথরে-গড়া মতির পলববিহীন দন্টি সেই একটি ছত্রের উপর পাতিয়া সে স্থির হইয়া দাঁড়াইয়া রহিল । এ চিঠি কিবেকার, কখন, কে আনিয়া দিয়া গেছে—সে কিছই জানে না । মণিালের বাটী কোন দিকে, কোন মখে তাহার বাড়ি ঢুকতে হয়, কোন পথটার উপর, কিজান্য সে এমন করিয়া তাহার ব্যগ্র উৎসক দটি পাতিয়া রাখিয়াছে, তাহার কিছই জানিবার জো নাই। সম্পমাখের এই ক'টি কালির দাগ শািন্ধ এই খবরটুকু দিতেছে যে, কোন এক পরশা হইতে একজন আর একজনের প্রতীক্ষায় পথ চাহিয়া চোখ নন্ট করিবার উপক্ৰম করিয়াছে, কিন্তু দেখা মিলে নাই । এদিকে, সেই প্রায়ান্ধকার ঘরের মধ্যে একদলেট চাহিয়া চাহিয়া, তাহার নিজের চোখ-দটি বেদনায় পীড়িত এবং কালো কালো অক্ষরগলো প্রথমে ঝাপসা এবং পরে যেন ছোট পোকার মত সমস্ত কাগজময় নড়িয়া বেড়াইতে লাগিল । তবও এমনি একভাবে দাঁড়াইয়া হয়ত সে আর কতক্ষণ চাহিয়া থাকিত ; কিন্তু নিজের অজ্ঞাতসারে এতক্ষণ ধরিরা তাহার ভিতরে ভিতরে যে নিশবাসটা উত্তরোত্তর জমা হইয়া উঠিতেছিল, তোহাই যখন অবরুদ্ধ স্রোতের বধি ভঙ্গার ন্যায় অকস্মাৎ সশব্দে গজিয়া বাহির । হইয়া আসিল, তখন সেই শব্দে সে চমকিয়া সন্মিবৎ ফিরিয়া পাইল । দ্বারের বাহিরে মািখ তুলিয়া দেখিল, সন্ধ্যায় অাঁধার প্রাঙ্গণতলে নামিয়া আসিয়াছে এবং যদি চাকর হ্যারিকেন লন্ঠন জ্বালাইয়া বাহিরের ঘরে দিতে চলিয়াছে । ডাকিয়া জিজ্ঞাসা করিল, বােব ফিরে এসেছেন, যদি গ’ शमद कश्व्नि, ना भा, कि qथनG ऊ डिनि श्रद्धनाम । এতক্ষণে অচলার মনে পড়িল, দীপারবেলার সেই লক্ষজাকার অভিনয়ের একটা অঙক শেষ হইলে, সেই যে তিনি বাহির হইয়া গিয়াছেন, এখনও ফিরেন নাই । স্বামীর প্রাত্যহিক গতিবিধি সম্বন্ধে আজ তাহার তিলমাত্র সংশয় রহিল না । সরেশের আসা পর্যন্ত এমনই একটা উৎকট ও অবিচ্ছিন্ন কলহের ধারা এ বাটীতে প্রবাহিত হইয়াছিল যে তাহারই সহিত মাতামতি করিয়া অচলা আর সব ভুলিয়াছিল।