পাতা:গৃহশ্রী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SJ) গৃহশ্ৰী কেবল অর্থে সংসারের সুখ হয় না, এবং অপেক্ষাকৃত হীন অবস্থা সত্ত্বেও গৃহস্থ গৃহ-সুখ হইতে বঞ্চিত না হইতে পারেন। গৃহিণীর গুণাপনা ও কাৰ্য্যকুশলতার উপরই সংসারের সুখ-দুঃখ অনেক পরিমাণে নির্ভর করে । এজন্য আমাদের মেয়োদিগকে এরূপ শিক্ষা দেওয়া দরকার, যাহাতে র্তাহারা ভালরূপ গৃহস্থালী শিখিতে পারেন। যাহাঁদের অবস্থা খুব ভাল, তঁহাদের গৃহেও যদি গৃহিণী সুনিপুণ ও কাৰ্য্যকুশলী না হন, তবে সে গৃহ ও অনেক সুখ হইতে বঞ্চিত থাকে ; আর যাহারা দরিদ্র, তাহারা সুগৃহিণীর অভাবে সংসারের সমস্ত সুখ হইতেই বঞ্চিত হইবেন। কোন কোন গৃহিণী প্ৰাতঃকাল হইতে সন্ধ্যা পৰ্য্যন্ত অক্লান্তভাবে পরিশ্রম করিতে পারেন ; তাহাকে রান্নাঘরে বসাইয়া দাও, তিনি বড় বড় ডেগ, ও কড়াইয়ের সঙ্গে সখ্য স্থাপন করিয়া দিবারাত্র রাধিতেছেন ; এবং যাহা রাধিতেছেন, তাহ খাইয়াও হয় তা লোকে সুখ্যাতি করিতেছে। পূর্ববঙ্গে এরূপ গৃহিণীর সংখ্যা বেশী দেখিতে পাওয়া যায়। কিন্তু স্ত্রীলোক শুধু রান্নার কাৰ্য্যে নিপুণা হইলেই কি সুগৃহিণী-পদবাচ্য হইবেন ? এমনও দেখা যায় যে, সেই গৃহিণীর শিশু-পুত্র রান্নাঘরের এক কোণে বসিয়া আলপিন গিলিতেছে, কিংবা কেরোসিনের ডিবির কালি মুখে মাখিতেছে, কিংবা জলের কলসী ফেলিয়া দিয়া জলের মধ্যে গড়াগড়ি যাইতেছে ; গৃহিণী কড়াতে তৈল প্ৰদান ও মৎস্যে হলুদ মাখা কাৰ্য্যে এত ব্যস্ত যে শিশুপুত্রের দিকে দৃষ্টি করিবার অবসর পাইতেছেন না ; অথবা যদি সেই দিকে দৃষ্টি পড়িয়াছে, আমনই উঠিয়া এক বৎসর বয়স্ক শিশুর পৃষ্ঠে কযিয়া চড় মারিতেছেন। হয় তা অবস্থা তেমন ভাল নহে, বেশী চাকর-চাকরাণী নাই, সেই সময় স্বামীর আফিসে যাইবার সময়, তিনি জামা খুজিয়া চীৎকার করিতেছেন ; গৃহিণী রান্নাকাৰ্য্যে মনোযোগ বেশী থাকাতে সে দিকে গৃহিণী শুধু রাধুনী বা পরিচারিক নহেন