পাতা:গৃহশ্রী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S8G গৃহশ্ৰী দ্বারা তপস্যার দ্বারা তঁহাকে ভাল করিতে চেষ্টা করিবেন। নিজে অসংযত ক্রুদ্ধ বা বিরক্ত হইয়া অথবা নিন্দ প্রচার করিয়া বা নিন্দার প্রশ্রয় দিয়া নিজের ভাঙ্গা সংসারটি আরও ভাঙ্গিবোন মাত্র । স্বামীর যাহাতে স্ত্রীর প্রতি শ্রদ্ধা জন্মে, এইরূপ আচরণ করা উচিত । যে নিজে দোষী, সে নিজেকে সর্বদাই হীন মনে করে। যখন সংসারে কোন বাধা না পায়, তখন বিবেকবাণী তাহাকে বাধা দিয়া থাকে, সে নিজে লজ্জিত থাকে, কিন্তু স্ত্রী যদি তখন উগ্র-মুক্তিতে গুরুমহাশযা সাজিয়া উপস্থিত হন, তখন স্বামীর মন হইতে ধীরে ধীরে সেই অনুতাপ ও লজ্জার ভাব দূর হইয়া যায়। প্রতিহিংসাবৃত্তি জাগিয়া উঠে, এবং সে কুকৰ্ম্মে আরও দৃঢ় রূপে ব্যত হয়। কিন্তু সে যদি জানে, যাহার। প্ৰাণে তাহার সেই ব্যবহার সর্ববাপেক্ষা বেশী লাগিয়াছে, সেই স্ত্রী হৃদয়ের দুঃখ গোপন করিয়া হাসি-মুখে তাহার সেবা করিতেছে, তাহার নিন্দ না হয়- এজন্য প্ৰাণপণে দোষগুলি ঢাকিয়া রাখিতেছে,-সে তাহার সেবায় ও নিজের ভিতরকার কষ্টে ক্রমে ক্ৰমে শীর্ণ হইয়া পড়িতেছে ও মধ্যে মধ্যে ইঙ্গিতে যে উপদেশ দিতেছে, তাহাতে তাহার প্রাণ খাকি হইয়া যাইতেছে—তাহা হইলে স্বামীর ভাল হইবার সম্ভাবনা থাকিবে । যে দুয়ারি দিয়া বিবেকবাণী তাহার কৰ্ণে পৌছায়, যাহা দিয়া স্বকৰ্ম্মেব জন্য অনুতাপশিখা তাহার হৃদয়ে প্ৰবেশ করিয়া তাহাকে দগ্ধ করে, স্ত্রীর প্রতি দয়া ও প্ৰেম সেই পথ দিয়াই নীরবে প্ৰবেশ করিবে । আমি বলিতে চাই না যে, যিনি এইরূপ করিবেন, তিনিই স্বামীকে পাপ হইতে উদ্ধার করিতে পরিবেন। চৈতন্যদেবের মত লোকও উড়িষ্যায় কেশব সামন্তকে উপদেশ ও ভক্তির জীবন্ত-রসধারা দিয়া উদ্ধার করিতে পারেন নাই । সুতরাং স্ত্রী সর্বদাই যে স্বামীকে এই উপায়ে পাইবেন, তাই। বলিতে পারি না-তবে যদি পাইবারু, কোন সম্ভাবনা থাকে—তবে এই উপায়ে। যে পৰ্যন্ত আত্মকৰ্ম্মের ফল প্ৰকৃতির নিয়মে পাকিয়া না উঠে, সে পৰ্য্যন্ত বৃথা টানাটানি S 0