পাতা:গৃহশ্রী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গৃহশ্ৰী SC 3 উচ্ছাস দেখিয়া তিনি মন্ত্ৰ-মুগ্ধ হইলেন, তাহার চরিত্র সম্পূর্ণ শোধরাইয়া গেল, তিনি বৈষ্ণৰ সাজিয়া দীনাতিদীনের ন্যাস তিলক কাটিয়া তখন তুলসী মালা গলায় পরিয়া তাহাই তাহার সমগ্র সম্পত্তি অপেক্ষ প্রিয় মনে করিতে লাগিলেন । কারণ, তিনি ভাবিলেন, সেই তুলসী-মালা جا তিলকই ভগবানের স্মৃতি-চিহ্ন । এই অবস্থায় মাত্ৰ একশত অশ্বারোহী সৈন্য ও চারিশত পদাতিক লইয়া তিনি একদা গঙ্গাস্নানে যাত্ৰা কবিলেন । নবাবের চর। তাহাকে ঘাইয়া বলিল,-“অতি অল্পসংখ্যক সৈন্য লইয়া চাদরায় গঙ্গামানে গিয়াছেন।” নবাব কালবিলম্ব না করিয়া বহুসংখ্যক সৈন্যের সাহায্যে তাহাকে ধরিয়া ফেলিলেন এবং ভূ-নিম্নে এক ভীষণ কারাগারে লৌহশূঙ্খলে বদ্ধ করিয়া রাখিয়া দিলেন । কযেকদিন পরে চাদ বাযকে নবাবের আদেশে দরবারে উপস্থিত করা হইল। নবাব তাহাকে অনেক ভৎসনা করিলেন । চাদরায় কেবল এইমাত্র বলিলেন,-“আমি প্রকৃতই অপরাধী, আমাকে দণ্ড দিন ।” তাহার এই বিনয় দেখিয়া নবাব বিস্মিত হইলেন, এবং কঠোর স্বর কিঞ্চিৎ কোমল করিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “কারাগাবে তুমি কেমন ছিলে ?” চাদরায় বলিলেন,-“আমি এত সুখে আর জীবনে কোথাও থাকি নাই।” বিস্ময়ের সহিত সম্রাট তাহার কি সুখ, তাহ পুনরায় জিজ্ঞাসা করাতে চাদরায় গদগদকণ্ঠে বলিলেন,-“আমার কখনও মনে হইয়াছে, তাহার পাদপদ্মে অলক্তক পরাইতেছি, কখনও মনে হইয়াছে, তঁহাকে ব্যাজন করিতেছি, কখনও বিভোর হইয়া মনে মনে পঞ্চপ্ৰদীপ দ্বারা তাহার আরতি করিয়াছি,—কখনও ধূপ ধূনা দিয়া মনে মনে তঁাহার মন্দির সুগন্ধ করিয়াছি, কখনও বা যুথি, জাতী প্ৰভৃতি কুসুমদামে অপূর্ব মালা গাথিয়া তাহার গলায় পরাইয়া ধন্য হইয়াছি, আমার প্রাণের প্ৰাণকে সেই কারাগারের মধ্যে নির্জনে যেরূপ পাইয়াছিলাম, এরূপ