পাতা:গৃহশ্রী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গৃহশ্ৰী ԵrՀ থাকুক বা না থাকুক, এ দেশের লোকের ধৰ্ম্মভাবের ও শৈশব-স্মৃতির সঙ্গে ঐ গাছের এমন একটা যোগ আছে যে, বিদেশে তুলসীর একটি চারা পাইলে সে তাহার দশগুণ বেশী মূল্য দিয়া কিনিবে এবং সেটিকে প্ৰাণেব বস্তু করিয়া তুলিবে। সাহেবেরা শীতপ্রধান দেশে থাকেন, তঁহাদের দেশের অনেক কচুপাতা বা বেতের বন বা ফুলহীন পাতার গাছ, ঐ রকম কোন কারণে তঁহাদের প্ৰিয় হইয়া পড়িয়াছে। এ দেশের শত শত সুগন্ধি ও ঘর-আলোকরা ফুল থাকা সত্ত্বেও তাহারা চিরাগত সংস্কারের ফলে ঐ সকল শোভা-সুগন্ধি-শূন্য গাছের চারা বেশী পছন্দ করেন। সেগুলি ঘোর বিদেশে তাহাদিগকে স্বদেশের কথা মনে করাইয়া দেয় । হিমালযের তুষার-শৃঙ্গের কোন স্থানে তাহারা সেই চারা পাইলে একটা অসম্ভব বেশ মূল্য দিয়া কিনিয়া থাকেন, উচ্ছা তঁহাদের পক্ষে স্বাভাবিক । কিন্তু আমরা কি বোকা । আমরা আমাদের গন্ধের খনি, শুভ্রাতার নিৰ্ম্মাল্য-বেল জুই তুলিয়া ফেলিয়া মোহগ্ৰস্তের ন্যায় অসম্ভব দাম দিয়া কতকগুলি কচু ও বেত কিনিয়া আনিতেছি, এবং তাঁহাদের ল্যাটিন নাম শুনাইয়া দর্শককে ভুলাইতে চেষ্টা করিতেছি! দর্শকের চক্ষু একান্ত বিকৃত না হইলে, তাহাতে কিছুতেই ভুলিবে না । হে দেশী গোলাপ !-রজনী গন্ধ,-জুই, বেল ও মালতী—তোমরা শোভার আকার, তোমাদের শোভা ও সুগন্ধি বুঝিবার শক্তিও আমরা হারাইয়াছি। লাল বর্ণের ছিট যুক্ত বড় বড় কচুর পাতা তোমাদিগকে হাসিয়া উড়াইয়া দিতেছে, তাহারা কোন কুহকে বড় মানুষদের মন ভুলাইল, ও তোমাদিগকে দেশত্যাগী করিতে চলিল, তোমরা ভাবিয়া পাইতেছে না । আমি একদা মফঃস্বলের কোন রাজ-বাড়ীতে যাইয়া দেখিয়াছিলাম-একটা বৃহৎ জায়গা জুড়িয়া ঐ প্রকার কচু, বেত এবং সাবু গাছের মত বড় বড় গাছ রহিয়াছে, তাহাদের প্ৰত্যেকের এক একটি বড় ল্যাটিন নাম আছে ও তাহদের আনিবার ব্যয়