পাতা:গোড়ায় গলদ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গোড়ায় গলদ २*> (সদস্বরে) জিগগেস কর-না, আমাদের নাতনিকে লাগছে কেমন— ইন্দুমতী। কী বল ঠাকুরজামাই, তবে আর-এক বার দম দিয়ে নিই। কমলমুখী। (মৃদুস্বরে ) ইন্দু, তুই আর জ্বালাস নে ভাই— একটু থাম। ইন্দুমতী। দিদি, ওর কানে একটু মোচড় দিলেই অমনি তোমার প্রাপে দ্বিগুণ বেজে উঠছে কেন। তুমি কি ওর তানপুরোর তার! প্রথমা। ওলো ও কমল, তোর রকম দেখে তো আর বাচি নে। হ্যা লো, এরই মধ্যে ওর কানের পরে তোর এত দরদ হয়েছে! তা ভাবিস নে ভাবিস নে— আমরা ওর দুটো কান কেটে নিচ্ছি নে, নিদেন একটা তোর জন্যে রেখে দেব । চন্দ্রকান্ত। ( জানালা হইতে মুখ বাড়াইয়া ) দরদ হবে না কেন। আজ থেকে উনি আমাদের বিনুদার কর্ণধার হলেন— সে কর্ণ উনি যদি না সামলাবেন তো কে সামলাবে। দ্বিতীয়া। ও মিনসে আবার কে ভাই ! ক্ষান্তমণি। (তাড়াতাড়ি ) ও বরের ভাই হয়।— ওগো, মশায়, তোমার বিনুদার হয়ে জবাব দিতে হবে না। উনি বেশ সেয়ানা হয়েছেন— এখন দিব্যি কথা ফুটেছে। তুমি এখন নিশ্চিন্ত হয়ে ঘরে যাও। চন্দ্রকান্ত। যে আজ্ঞে, আদেশ পেলেই নিৰ্ভয়ে যেতে পারি। এখন বোধ করি কিছুক্ষণ ঘরে টিকতে পারব। প্রস্থান ইন্দুমতী। না ভাই, এখানে বড় আনাগোনার রাস্তা— বাইরে ঐ দরজাটা দিয়ে আসি । উঠিযা দ্বারের নিকট আগমন নিমাই। একবার উকি মেরে বিনুদার অবস্থাটা দেখে যেতে হচ্ছে। ইন্দুমতার সম্মুখে আসিয়া উপস্থিত ইন্দুমতী । আপনারা বেশি ব্যস্ত হবেন না, আপনাদের প্রাণের বন্ধুটি জলে পড়েন নি। নিমাই। সেজন্যে আমি কিছু ব্যস্ত হই নি। আমার নিজের একটা জিনিস হারিয়েছে আমি তারই খোজ করে বেড়াচ্ছি। ইন্দুমতী। হারাবার মতো জিনিস যেখানে-সেখানে ফেলে রাখেন কেন। নিমাই। সে আমাদের জাতের স্বধৰ্ম— আমরা সাবধান হতে শিখি নি। সে খাতাটা যদি আপনার হাতে পড়ে থাকে— ইন্দুমতী । খাতা ? হিসেবের খাতা ? নিমাই। তাতে কেবল খরচের হিসেবটাই ছিল, জমার হিসেবটা যদি বসিয়ে দেন তো আপনার কাছেই থাক । ইন্দুমতী। ছিছি, আজ আমি কী যে বকবিকি করছি তার ঠিক নেই। আজ আমার কী হয়েছে। ধঃ ৩ দ্বার রোধ