পাতা:গোবিন্দ দাসের করচা.djvu/১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

У о - গোবিন্দ দাসের করচা মধ্যে ইহা আপনাকে রেজেষ্টারী ডাকে পাঠাইয়। দিব।” সাত দিন আস্তে আস্তে চলিয়া গেল। যথাসময়ে পুস্তক আসিল না। বাবা একটু ব্যস্ত হইয়া পড়িলেন, কারণ এই ঘটনার ৪৫ বৎসর পূৰ্ব্বে আদত পুথিখানি তিনি কালিদাস নাথকে ফিরাইয়া দিয়াছিলেন। বাবা শিশির বাবুকে কয়েক খানি পত্র লিখেন । শিশির বাবু ছিলেন কাজের লোক । বহু কাল উত্তরের প্রতীক্ষ । করিয়া অবশেষে নিরাশ হইয়া তিনি স্বয়ং কলিকাতায় আসিয়া শিশির বাবুর সহিত সাক্ষাৎ করেন । শিশির বাবু বাবাকে দেখিবা মাত্র বলেন ‘আপনার পত্রের উত্তর দিতে পারি নাই, আপনার নিকট বিশেষ লজ্জিত। আমি গোবিন্দ দাসের করচার সেই কয়েক পৃষ্ঠ শস্তু বাবুকে পড়িতে দিয়াছিলাম, তিনি উহা হারাইয়া ফেলিয়াছেন।” বাব। বিফলমনোরথ হইয়া ফিরিয়া আসেন এবং কালিদাস নাথের নিকট প্রাচীন পুথিখানি পুনরায় পাইবার জন্য অনুরোধ করেন, কিন্তু কালিদাস নাথ বলিলেন ‘আমি যাহার নিকট হইতে এই পুস্তক খান আনিয়াছিলাম, তাহা তাহাকে ফেরৎ দিয়াছি, তাহা ফিরিয়া পাইবার সম্ভাবন নাই।’ ইহার কিছু দিন পরে বাবা জানিতে পারিলেন . শান্তিপুরের পাগলা গোস্বামীদের বাড়ীতে হরিনাথ গোস্বামীর নিকট গোবিন্দদাসের করচার আর এক খানি পুথি আছে। ঐ পুথিখানি অত্যস্ত পাঠ বিকৃতি দোষে দুষ্ট এবং অসম্পূর্ণ ছিল। পিতাঠাকুর মহাশয়ের নিকট ষে কিছু কিছু নোট ছিল, তাহার সহিত ঐ পুথির লেখা মিলাইয়া কষ্টে স্বষ্টে নষ্ট পত্রগুলির পুনরুদ্ধার করা হয়, পরে সংস্কৃত প্রেস ডিপজিটারির অধ্যক্ষদিগকে এই পুস্তক প্রকাশ করিতে দেওয়া হয় । গোবিন্দ দাসের করচ এই ভাবে ১৮১৭ শকে ( ১৮৯৫ খৃঃ ) প্রকাশিত হয় । শিশির বাবু গোবিন্দ দাসকে কায়স্থ প্রতিপন্ন করিবার চেষ্টা করিয়া গিয়াছেন। কিন্তু জয়ানন্দের চৈতন্য মঙ্গল প্রকাশিত হইবার পরে সাধারণ লোকে বুঝিতে পারিল যে গোবিন্দ কায়স্থ ছিল না, মুদ্রিত পুস্তকে যাহা লিখিত হইয়াছে, তাহাই, অর্থাৎ খাটি ‘কৰ্ম্মকার । এই ব্যাপারে শিশির বাবু কিছু ক্ষুণ্ণ হইয়াছিলেন কিনা, বলিতে পারি না। পিতৃদেব র্তাহার অনুরোধ রক্ষা করিয়া পুস্তক খানি তাহার হাতে অর্পণ করিতে পারেন নাই, ইহাতেও সম্ভবত তিনি কিছু ক্ষুব্ধ হইয়াছিলেন। যে কোন কারণেই হউক তিনি গোবিন-দাসের মুদ্রিত করচার প্রথম কয়েক পৃষ্ঠার মৌলিকতা সম্বন্ধে সন্দেহ প্রকাশ করিয়া গিয়াছেন। কিন্তু তৎসত্ত্বে ও অমিয়-নিমাইচরিতের মহাপ্রভুর দাক্ষিণাত্য ভ্রমণ করচাকে অবলম্বন করিয়াই লিখিয়া গিয়াছিলেন, এবং তাহার ভ্রাতা মতিবাবু শ্ৰীবিষ্ণু পত্রিকায় করচার গুণগরিমা ও ঐতিহাসিকত্ব বারংবার কীৰ্ত্তন করিয়া গিয়াছেন। এইরূপ নানাবিধ জটিল কারণে প্রথম কয়েক কয়েক পৃষ্ঠা সম্বন্ধে ষে একটু সন্দেহ জন্মিয়াছিল, এখন বহু দিন পরে তাহাই সমগ্র পুথি খানিকে অগ্রাহ করিবার কারণ হইয়া দাড়াইয়াছে। অমৃত বাজার হইতেই এই আন্দোলন মুরু হইয়াছিল।