তাহার বাড়িতে ঠাকুরপূজা হয়, ইত্যাদি।”
ললিতা কহিল, “সেজন্য যদি আপত্তি থাকে তবে নাহয় আমাদের বাড়িতেই ইস্কুল বসবে।”
কিন্তু ইহাতেও আপত্তির খণ্ডন হইল না, আরো-একটা কিছু বাকি আছে। ললিতা অন্য বাড়িতে না গিয়া সুধীরকে ডাকাইয়া পাঠাইল। জিজ্ঞাসা করিল, “সুধীর, কী হয়েছে সত্য করে বলো তো।”
সুধীর কহিল, “পানুবাবু তোমাদের এই ইস্কুলের বিরুদ্ধে উঠে-পড়ে লেগেছেন।”
ললিতা জিজ্ঞাসা করিল, “কেন, দিদির বাড়িতে ঠাকুরপুজো হয় ব'লে?”
সুধীর কহিল, “শুধু তাই নয়।”
ললিতা অধীর হইয়া কহিল, “আর কী, বলোই-না।”
সুধীর কহিল, “সে অনেক কথা।”
ললিতা কহিল, “আমারও অপরাধ আছে বুঝি?”
সুধীর চুপ করিয়া রহিল। ললিতা মুখ লাল করিয়া বলিল, “এ আমার সেই স্টীমার-যাত্রার শাস্তি! যদি অবিবেচনার কাজ করেই থাকি তবে ভালো কাজ করে প্রায়শ্চিত্ত করার পথ আমাদের সমাজে একেবারেই বন্ধ বুঝি! আমার পক্ষে সমস্ত শুভকর্ম এ সমাজে নিষিদ্ধ? আমার এবং আমাদের সমাজের আধ্যাত্মিক উন্নতির এই প্রণালী তোমরা ঠিক করেছ!"
সুধীর কথাটাকে একটু নরম করিবার জন্য কহিল, “ঠিক সেজন্যে নয়। বিনয়বাবুরা পাছে ক্রমে এই বিদ্যালয়ের সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়েন ওঁরা সেই ভয় করেন।”
ললিতা একেবারে আগুন হইয়া কহিল, “সে ভয়, না সে ভাগ্য! যোগ্যতায় বিনয়বাবুর সঙ্গে তুলনা হয় এমন লোক ওঁদের মধ্যে কজন আছে!"
সুধীর ললিতার রাগ দেখিয়া সংকুচিত হইয়া কহিল, “সে তো ঠিক কথা। কিন্তু বিনয়বাবু তো—"
ললিতা। ব্রাহ্মসমাজের লোক নন! সেইজন্যে ব্রাহ্মসমাজ তাঁকে দণ্ড