সুচরিতা গোপনে চোখ মুছিয়া তাড়াতাড়ি উঠিয়া দাঁড়াইল।
হরিমোহিনী কহিলেন, “কী হচ্ছে?”
সুচরিতা তাঁহার কোনো উত্তর করিল না। হরিমোহিনী কঠোর স্বরে কহিলেন, “এ-সমন্ত কী হচ্ছে আমি তো কিছু বুঝতে পারছি নে।”
সুচরিতা কহিল, “মাসি, কেন তুমি দিনরাত্রি আমার উপরে এমন করে দৃষ্টি রেখেছ!”
হরিমোহিনী কহিলেন, “কেন রেখেছি তা কি বুঝতে পার না? এই-যে খাওয়া-দাওয়া নেই, কান্নাকাটি চলছে, এসব কী লক্ষণ। আমি তো শিশু না, আমি কি এইটুকু বুঝতে পারি নে?”
সুচরিতা কহিল, “মাসি, আমি তোমাকে বলছি, তুমি কিছুই বোঝ নি। তুমি এমন ভয়ানক অন্যায় ভুল বুঝছ যে, সে প্রতি মুহূর্তে আমার পক্ষে অসহ্য হয়ে উঠছে।”
হরিমোহিনী কহিলেন, “বেশ তো, ভুল যদি বুঝে থাকি তুমি ভালো করে বুঝিয়েই বলো-না।”
সুচরিতা দৃঢ়বলে সমস্ত সংকোচ অধঃকৃত করিয়া কহিল, “আচ্ছা, তবে বলি। আমি আমার গুরুর কাছ থেকে এমন একটি কথা পেয়েছি যা আমার কাছে নতুন, সেটিকে সম্পূর্ণ গ্রহণ করতে খুব শক্তির দরকার, আমি তারই অভাব বোধ করছি- আপনার সঙ্গে কেবলই লড়াই করে পেরে উঠছি নে। কিন্তু মাসি, তুমি আমাদের সম্বন্ধকে বিকৃত করে দেখেছ। তুমি তাঁকে অপমানিত করে বিদায় করে দিয়েছ তুমি তাঁকে যা বলেছ সমস্ত ভুল, তুমি আমাকে যা ভাবছ সমস্ত মিথ্যা। তুমি অন্যায় করেছ। তাঁর মতো লোককে নিচু করতে পার তোমার এমন সাধ্য নেই। কিন্তু কেন তুমি আমার উপরে এমন অত্যাচার করলে, আমি তোমার কী করেছি।”
বলিতে বলিতে সুচরিতার স্বর রুদ্ধ হইয়া গেল, সে অন্য ঘরে চলিয়া গেল।
হরিমোহিনী হতবুদ্ধি হইয়া গেলেন। তিনি মনে মনে কহিলেন, ‘না
৫১৭